বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্বব্যাপী ২৪ শতাংশ কার্বন নিঃসরণে দায়ী পরিবহন খাত

জলবায়ু সম্মেলন শেষ কাল

মাহমুদ আজহার, গ্লাসগো (স্কটল্যান্ড) থেকে

নানামুখী আলোচনা ও একে অন্যকে দোষারোপের মধ্য দিয়ে আগামীকাল শুক্রবার শেষ হচ্ছে আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন। এরই মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক সংস্থা গতকাল কপ২৬ চুক্তির প্রথম খসড়া প্রকাশ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত খসড়া কপ২৬ শীর্ষ সম্মেলনের শেষে প্রকাশ করা হবে। এদিকে জলবায়ু সম্মেলনের শেষ দিকের আলোচনায় বিশ্বব্যাপী ২৪ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য পরিবহন খাতকে দায়ী করা হয়। এজন্য চূড়ান্ত খসড়ায় পরিবহনে সবুজায়নের বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গতকাল সম্মেলনে এক বক্তব্যে বিভিন্ন পার্থক্য দূরে সরিয়ে পৃথিবী এবং জনগণের জন্য এগিয়ে আসার আহ্‌বান জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সম্মেলনে জলবায়ু-বিজ্ঞানীরা বলেন, বায়ুমন্ডলের অধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পৃথিবীর জন্য নতুন বিপত্তি ডেকে আনছে। এতে বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকিতে পড়বে, যা এখনই বেড়ে ৪৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পদের যে ক্ষতি করছে ২০৩০ সালে এর থেকে দ্বিগুণ করবে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিলের প্রতিশ্রুতি পূরণে উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্‌বান জানানো হয়েছিল। সে প্রত্যাশায় পুরোপুরি সাড়া দেয়নি প্রভাবশালী দেশগুলো। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশের জন্য ৪১৩ মিলিয়ন নতুন অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। ১০০ বিলিয়নের জায়গায় অর্ধবিলিয়নও প্রতিশ্রুতি মেলেনি উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে।

১৯৯২ সালের গৃহীত জাতিসংঘ জলবায়ু সনদ শিল্পোন্নত ধনী দেশগুলোর অনেকেই মানছে না। ফলে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা ঘন ঘন আঘাত হানছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশে। নতুন তহবিল সব রিসোর্স মোবিলাইজেশনের লক্ষ্যকে ছাড়িয়ে গেছে। এ খাতে যে অর্থ পাইপলাইনে আছে তা আগামীতে ৩০০ মিলিয়ন ছাড়াবে। মূলত জলবায়ু প্রকল্প বাস্তবায়নে এগুলো ব্যয় হবে। অনেক দেশ প্রথমবারের ফান্ড দিয়েছে, যা অতীতের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেশি ছিল। ঘোষিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জার্মানি ৫৮ দশমিক ২, যুক্তরাষ্ট্র ৫০, স্পেন ৩৫, যুক্তরাজ্য ২০ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুইডেন ২০১৯ থেকে ২০২২ অর্থবছরে ৫৩ মিলিয়নের প্রতিশ্রুতির মধ্যে ১৫ মিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে। সুইজারল্যান্ড ১০, নরওয়ে ৮ দশমিক ৩৮, ফিনল্যান্ড ৮ দশমিক ১, কানাডার জাতীয় সরকার ৮ দশমিক ১, কুইবেক আঞ্চলিক সরকার ৮ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আয়ারল্যান্ড ১০ মিলিয়ন ইউরো, বেলজিয়ামের ফ্ল্যান্ডার্স অঞ্চল ৩ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন এবং কাতার ৫ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সম্মেলন শেষ হওয়ার আগে তহবিল আরও বাড়তে পারে। অভিযোজন তহবিলের উচ্চ আশা ছিল, যা প্রায় ৪০ হাজার অংশগ্রহণকারীকে আকৃষ্ট করেছে। সম্মেলনের শীর্ষ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি ছিল অভিযোজন কর্মকে উন্নত করা। সরকার, সুবিধাভোগী এবং সমর্থকের উন্নয়নে ফান্ড ব্যবহার করা হবে।

সর্বশেষ খবর