বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
বকশিশ না দেওয়ার জের

অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ায় রোগীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বকশিশ না দেওয়ায় ওয়ার্ডবয় অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ার পর রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া বিকাশ চন্দ্র দাসের (১৮) লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে ওয়ার্ডবয়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। মারা যাওয়া বিকাশ চন্দ্র দাস গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার শিয়ালকুন্ডি গ্রামের বিশু দাসের ছেলে।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ সদস্যরা সেখানে পৌঁছে ঘটনার সত্যতা পায়। ঘটনার পর থেকেই ওয়ার্ডবয় ধুলু পালিয়ে গেছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।

মারা যাওয়া বিকাশের চাচা শচীন চন্দ্র জানান, বিকাশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা উপজেলার সাঘাটায় সাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে পেছন থেকে একটি অজ্ঞাতনামা মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করে। এরপর শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রাত সাড়ে ১০টায়  বিকাশকে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাপত্র দিয়ে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পর তাকে সর্জারি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার সময় আসাদুজ্জামান ধুলু নামের এক ওয়ার্ডবয় ট্রলি নিয়ে পৌঁছে দেয়। পৌঁছে দেওয়ার পর ধুলু ২০০ টাকা দাবি করে। কাছে টাকা না থাকায় বিকাশের বাবা বিশু দাস ১৫০ টাকা দেয়। ৫০ টাকা না পেয়ে ধুলু টান দিয়ে বিকাশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেয়। এর পরপরই বিকাশের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন তারা ওয়ার্ডবয়কে অক্সিজেন লাগিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও আরও ৫০ টাকা বকশিশ দাবি করে। এরমধ্যে বিকাশের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়ে যায়। একপর্যায়ে বিকাশের মুখ দিয়ে শ্লেষ্মা বের হতে থাকলে ভয়ে ওয়ার্ডবয় পুনরায় অক্সিজেন লাগিয়ে দেয়। কিন্তু বিকাশ অক্সিজেন না নিলে ওয়ার্ডবয় সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে ডাক্তার এসে রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন।

বুধবার দুপুরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, ওয়ার্ডবয় আসাদুজ্জামান ধুলু সরকারি কর্মচারী নয়। সে চুক্তিভিত্তিক, মাঝে মধ্যে ডিউটি করত। তার বাড়ি গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জে। এ ঘটনায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মনির আলীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর