শিরোনাম
শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সরকার দলীয়করণ করছে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের বিচারব্যবস্থা সরকার পুরোপুরি দলীয়করণ করে ফেলেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ১১ বছর সাজা দেওয়ায় বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেছে। এ বিষয়ে দেশের নতুন-পুরান আইনজীবীরা বলছেন এটা কখনই কাম্য হতে পারে না। এটা কখনো বিচারব্যবস্থাকে সম্মানজনক অবস্থায় নেবে না। বরং বিচারব্যবস্থার ওপরে মানুষের যে আস্থা আছে তা ধ্বংস করে দেবে। আর সেটাই করেছে তারা।

গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন। বিএনপির ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন জাতীয় কমিটি’র উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়। সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহ্‌বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় সভায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে, প্রশাসন ধ্বংস করা হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে বিচারব্যবস্থা পুরোপুরি দলীয়করণ করে ফেলা হয়েছে। এখানে এখন ন্যায়বিচার পাওয়াটা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আর কোনো বিচারক সাহস পাবেন না সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে। জনগণকে ন্যায়ের পক্ষে কোনো রায় প্রদান করতে। সরকার যা চাইবে না, সে রায় দেওয়া তাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বর্তমান সংকটটা অত্যন্ত গভীর। এ সংকট আমাদের অস্তিত্বের। যেটা ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ সালের আগে ছিল, সে সংকট আজ আবার এখানে দেখা দিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আমাদের যা কিছু অর্জন ছিল তার সবকিছু আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এই যে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট একটা সরকার আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আমাদের সব অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছে, এর হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে সবাইকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের সব মানুষকে নিয়ে, সব রাজনৈতিক সংগঠনকে নিয়ে, সব রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। এর মাধ্যমে এখানে সত্যিকার অর্থেই আইনের শাসন, একটা মুক্ত অর্থনীতি, একটা মুক্ত সমাজব্যবস্থা এবং জনগণ যে ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা চায় সেই রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সব ভালো জিনিস, শুভ জিনিস, সুন্দর জিনিস এ সরকার ধ্বংস করে ফেলেছে। আজ কোথাও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। আইন আক্ষরিক অর্থে আজ মানুষের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে দমন করা হয়েছে। গতকাল আমি দেখেছি ফটোগ্রাফার কাজলকে আবারও সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়েছে। ৪ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ভয় দেখিয়ে, ত্রাস সৃষ্টি করে সমাজে একটা ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে মানুষের কথা বলা, প্রতিবাদ করার ইচ্ছাটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থার উত্তরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর