নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি পাঁচ তলা বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে লালখাঁর মোড়ে মোক্তার মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মঙ্গলী রানী নামে এক নারী। তিনি দুর্ঘটনাকবলিত বাড়ির পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া। এর আগে মায়া রানী নামে এক নারী ঘটনাস্থলেই মারা যান। আরও অন্তত ১৫ নারী, পুরুষ, শিশু দগ্ধ হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে সাতজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- জয়নাল আবেদীনের ছেলে নাছির (৩৩), হোসেন (৩৩), আবেদ আলীর ছেলে অহিদুল ইসলাম (৪৫), ঝুমা (২০), মণি (২৫), তুলসী (৫৫) ও রুবেল (২২)। বিস্ফোরণে বাড়ির পাঁচটি রুমসহ পাশের আরও দুটি বাড়ির দেয়াল উড়ে গেছে। ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমানুর রহমান জানান, মঙ্গলী রানীকে দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল ভোর ৬টায় বিকট শব্দে মোক্তার মিয়ার পাঁচ তলা বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের আরও দুটি বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিস্ফোরণে বাড়ির পাঁচটি ও পাশের বাড়ির দুটি রুমের দেয়াল উড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত রুমগুলোয় কতজন ছিলেন তা কেউ বলতে পারেননি। এর মধ্যে মোক্তার মিয়ার বাড়ির মায়া রানী (৪০) ঘটনাস্থলেই দেয়ালচাপায় মারা যান। এ বাড়িতে কতজন আহত হয়েছেন তা-ও কেউ বলতে পারেননি। পাশের সুমির বাড়ির একটি রুমের ভাড়াটিয়া স্বামী-স্ত্রী ও তাদের দুই শিশু সন্তান দেয়ালচাপায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ‘রান্না করার গ্যাস কোনো রুমে জমে ছিল তা থেকেই এ বিস্ফোরণ। আমাদের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আমরা আসার আগেই আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’ বিস্ফোরণের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা খাতুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
