মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কভিড হাসপাতাল খুলছে সাধারণের জন্য

করোনা রোগীদের জন্য থাকবে সীমিত আসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড হাসপাতাল খুলছে সাধারণের জন্য

দেশে কমেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। আক্রান্ত কমে আসায় হাসপাতালে কমেছে কভিড-১৯ রোগীর চাপ। করোনা রোগীদের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক আসন রেখে সাধারণ রোগীদের সেবা চালু করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। দেশের সব সরকারি হাসপাতালে দ্রুত সব সেবা চালু করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কভিড-১৯ আক্রান্ত কমে যাওয়ায় কভিড রোগীদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে ননকভিড রোগীদের সেবা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা দেড় মাস আগে এ-সংক্রান্ত চিঠি তাদের পাঠিয়েছি। হাসপাতালগুলোয় কভিড রোগীদের জন্য অল্পসংখ্যক শয্যা নির্দিষ্ট রাখতে বলা হয়েছে। কারণ এখানো হাসপাতালগুলোয় ২০০-৩০০ করোনা আক্রান্ত ভর্তি আছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনা রোগীদের জন্য কতগুলো শয্যা রাখবেন তারা তা আমরা নির্দিষ্ট করে বলিনি। হাসপাতালগুলো তাদের রোগীর চাপ অনুযায়ী কভিড শয্যা নির্ধারণ করবে। যারা এখনো কভিড ছাড়া সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেননি তাদের ফোন করেও বলছি। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে গিয়ে বলে এসেছি। তারা মঙ্গলবার (আজ) সাধারণ রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।’ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার নেমে এসেছে ১ শতাংশের ঘরে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নেমে আসায় জনজীবনে ফিরেছে স্বস্তি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে কোনো দেশে যদি টানা দুই সপ্তাহ দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকে তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বলে ধরা হবে। মার্চে হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করে করোনা সংক্রমণ। জুন পর্যন্ত হাসপাতালে ঠাঁই ধারণের জায়গা ছিল না। রোগী নিয়ে হাসপাতালের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হয়েছে স্বজনদের। আইসিইউর জন্য ছিল হাহাকার। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে দেশে কমতে শুরু করে করোনা সংক্রমণ হার। ১ নভেম্বর করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ২১৪ জন, মারা গেছেন দুজন। শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ০৮ শতাংশ। গতকাল করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৪ জন, মারা গেছেন চারজন। সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন ২২৯ জন। করোনা শনাক্তের হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। এখন বদলে গেছে সংক্রমণের চিত্র। রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৩ হাজার ৬৫৯ শয্যার মধ্যে ৩ হাজার ২৭৬টি ছিল ফাঁকা। ৩৮৮টি আইসিইউর ৩২৬টিতে ছিল না রোগী ভর্তি। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১৬৯ শয্যার ১২টিতে রোগী ভর্তি ছিল। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭৫ শয্যার মধ্যে ১৮৭টি ফাঁকা ছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬০৫ শয্যার ৪০৭টিই ছিল ফাঁকা। এসব হাসপাতালের আইসিইউর চিত্রও একই রকম। তাই সাধারণ রোগীদের জন্য সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজ (মঙ্গলবার) থেকে বহির্বিভাগ চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে সেবা পাবেন সাধারণ রোগীরা। ননকভিড রোগীদের চিকিৎসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ‘এ হাসপাতালের ৫০০ শয্যা কভিড ডেডিকেটেড ছিল। অধিদফতরের নির্দেশনার আগে থেকেই আমরা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতে শুরু করেছি। বর্তমানে ৮৫০ শয্যার হাসপাতালে ৯৫০ জন সাধারণ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। পাশাপাশি কভিড রোগীদের জন্য ৫০ শয্যা সংরক্ষিত আছে। সেখানেও ২০ জনের মতো রোগী রয়েছেন।’

সর্বশেষ খবর