বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকায় বাস সংকট ভোগান্তিতে যাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার-নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে বাগ্্বিতন্ডার জেরে গতকাল দুপুর থেকে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে চালকদের একটি অংশ বাস চালানো বন্ধ করে দেন। হঠাৎ করে বাস থেকে পথের মধ্যে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন নারী, শিশু, বয়স্কসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উপায় না থাকায় অনেককেই হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে যেতে দেখা যায়। আবার অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্য বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিকালের দিকে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসে বলে দাবি করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা।

সরেজমিন মিরপুর-১২, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১, মিরপুর-১সহ কালশী ও ইসিবি চত্বর এলাকায় গতকাল দুপুরে বাস চলাচল বন্ধ থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া শাহবাগ, ফার্মগেট, বিমানবন্দর ও আবদুল্লাহপুরেও বাস সংকটের জন্য যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়েন। যাত্রী ও পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিরপুরে বাসচালকরা হঠাৎ করে মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের নেমে যেতে বলেন। এতে একপর্যায়ে চালক ও হেলপারদের সঙ্গে যাত্রীদের কথাকাটাকাটিসহ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে             সেখানে পুলিশ সদস্যদের আসতে দেখা যায়। মিরপুরের বিভিন্ন সড়কের মাথায় বাসযাত্রীরা গন্তব্যে যাওয়ার জন্য দুপুর থেকে জটলা করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাস, রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা দেখামাত্রই যাত্রীদের হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা যায়। এ সময় সড়কে শত শত যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কালশী এলাকায় কথা হলে গৃহিণী হাসনা হেনা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার বাচ্চাদের বোনের বাসা উত্তরায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাসের হেলপার যাত্রীদের নেমে যেতে বলেন। এতে যাত্রীদের সঙ্গে চালক ও হেলপারের হাতাহাতি হয়। আমি বিপদ হবে আশঙ্কায় বাস থেকে নেমে আসি। কিন্তু এখন উত্তরায়ও যেতে পারছি না আবার বাসায় যে ফিরে যাব সে ব্যবস্থাও নেই। কী করব বুঝতে পারছি না।’ ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, ‘মিরপুরের কিছু বাসশ্রমিক আগের মতো গেটলক ও সিটিং সার্ভিস চালাতে চান। কিন্তু বিগত কয়েক দিন আমরা গেটলক ও সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের জন্য অভিযান চালিয়ে আসছিলাম। আমরা তাদের চার্ট অনুযায়ী ভাড়া আদায় করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা গেটলক পদ্ধতিতে যাত্রী পরিবহনের জন্য দুপুরে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়ে পথের মধ্যেই যাত্রী নামিয়ে দেন। শ্রমিকদের এ বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া মাত্রই আমরা সেই এলাকার দায়িত্বরত পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।’ তবে বিকাল ৪টার পর মিরপুর এলাকায় পুনরায় বাস চলা শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান। এর আগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে মিরপুরের কালশীতে কয়েকজন যাত্রী একটি বাসের দুই কর্মচারীর গায়ে হাত তুললে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। এর প্রতিবাদে চালকরা বাস চালানো বন্ধ করে দেন। পরে পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক সজীব খান বলেন, ‘দুপুর থেকে মিরপুরে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে বাগ্্বিতন্ডা চলছে বলে জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঘটলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর