সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শেরপুরে গারোদের ওয়ানগালা উৎসব

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে গারোদের ওয়ানগালা উৎসব

আদিবাসী নৃগোষ্ঠী গারোদের ওয়ানগালা উৎসব জমজমাটভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দিনব্যাপী এ উৎসব চলে।

সকাল ৯টায় থক্কা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার বিপুল ডেভিট দাস সিএসসি। উৎসবে ক্রুশচত্বরে বাণী পাঠ, খামালকে কুথুব পড়ানো ও থক্কা প্রদান, জনগণকে থক্কা দেওয়া, পবিত্র খ্রিস্টযাগ, দান সংগ্রহ, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশিদ। এ সময় জেলা প্রশাসকপত্নী জান্নাতুল ফেরদৌসী, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়নাল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য খ্রিস্টভক্ত এবং গারাগানজিং, কতচু, রুগা, মমিন, বাবিল, দোয়াল, মাতচি, মিগাম, চিবক, আচদং, মাতাবেং ও আরেং নামে ১২টি গোত্রের গারো সম্প্রদায়ের লোকজন এবার ওয়ানগালা উৎসবে উপস্থিত হন।

ওয়ানগালা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার বিপুল ডেভিট দাস সিএসসি জানান, একদা গারোদের দেবতা ‘মিসি সালজং’ পাহাড়ি এলাকার গারোদের হাতে কিছু শস্য বীজ দিয়ে বলেছিল, ‘তোমরা এটা রোপণ কর, তোমাদের আহারের সংস্থান হবে এবং তোমরা যে শস্য পাবে তা থেকে সামান্য কিছু শস্য আমার নামে উৎসর্গ করবে।’ তখন থেকে গারো সম্প্রদায়ের লোকজন পাহাড়ে জুম চাষ করে থাকে। আর ফসল ঘরে উঠলেই তাদের শস্য দেবতা ‘মিসি সালজং’কে উদ্দেশ করে ওয়ানগালা উৎসব পালন করত। কিন্তু এখন তারা উৎসবটি যিশু খ্রিস্ট বা ঈশ্বরকে উৎসর্গ করে পালন করেন। উল্লেখ্য, শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী মরিয়মনগর খ্রিস্টান ধর্মপল্লীর নিয়ন্ত্রণে জেলার সদর উপজেলাসহ শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী এবং জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার গারো সমাজের ৪৭টি গ্রাম রয়েছে। ওসব গ্রামের প্রায় ২২ হাজার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস।

সর্বশেষ খবর