বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সাক্ষ্য পর্যায়ে আটকে আছে বিচার প্রক্রিয়া

তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডের নয় বছর পূর্তি আজ

নাজমুল হুদা, সাভার

তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকান্ডের ঘটনার নয় বছর পূর্তি আজ। ২০১২ সালের এই দিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ১১৭ জন পোশাকশ্রমিক পুড়ে মারা যান। জীবন রক্ষায় ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়েও মারা যান অনেকে। আগুনের লেলিহান শিখার মধ্যে শত শত শ্রমিকের বাঁচার আকুতি আর কান্না, নাড়া দিয়েছিল বিশ্বকে। এ ঘটনায় শতাধিক শ্রমিক আহত হন। অনেকেই এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। নিহতদের স্মরণে ভবনের সামনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে আহত শ্রমিক ও নিহতদের স্বজনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে পুড়ে যাওয়া তাজরীন গার্মেন্টের ফটকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা। টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনার নবম বছরে এসেও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও তাদের পরিবারের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকান্ডে প্রতিষ্ঠানের মালিক দেলোয়ার হোসেন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তারপরও বিচার পায়নি ক্ষতিগ্রস্তরা।

এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তাজরীনের অগ্নিদুর্ঘটনার পরের বছর সিআইডি অভিযোগপত্র দেয়। আসামিরা হলেন- তাজরীনের এমডি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলামসহ ১৩ জন। বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে আছেন। মামলার সাক্ষী ১০৪ জন। এর মধ্যে আদালত নয়জনের সাক্ষ্য নিয়েছে।

গার্মেন্ট শ্রমিক ইব্রাহিম বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে মালিকদের গাফিলতিতে অগ্নিকান্ড ও ভবন ধসের ঘটনায় অনেক শ্রমিক মারা গেছেন। তবে একটি ঘটনারও বিচার হয়নি। তবে ন্যায্য দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করলেই কালো তালিকাভুক্ত, চাকরিচ্যুত, মামলা, হামলার মতো ঘটনা ঘটে। মালিকপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ার কারণেই তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকান্ডের ঘটনার বিচার হয়নি। এদিকে বিজিএমইএসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার সহযোগিতায় চাকরি বা ক্ষুদ্র ব্যবসা দিয়ে তাজরীন ফ্যাশনসে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই নতুন করে জীবন শুরু করেছেন। তবে, অসহায় দরিদ্র শ্রমিকদের অনেককেই, চিকিৎসা ও সংসার খরচ মেটাতে বিক্রি করতে হয়েছে ভিটে-মাটি। আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর