বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

ডালের বড়ায় স্বপ্ন বুনছেন নারীরা

আবদুল বারী, নীলফামারী

ডালের বড়ায় স্বপ্ন বুনছেন নারীরা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের বগুলা গাড়ি সাতনালা গ্রামটি ডালের বড়া গ্রাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ওই গ্রামের ১৫ থেকে ২০টি পরিবার ডালের বড়ায় স্বপ্ন বুনেন বছরজুড়ে। এ জন্য নারীরা নিত্যদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই ভিজিয়ে রাখা মাষকলাইয়ের খোসা ছড়িয়ে শিলপাটায় পিষার কর্মযজ্ঞে মেতে ওঠেন। সাতনালা গ্রামের মনিবালা জানান, এ ডালের বড়া তৈরির উপকরণ খুব একটা বেশি নয়। প্রথমে মাষকলাইয়ের মিহি উপকরণ, চালের গুঁড়া, কালোজিরা মিশিয়ে ভালোভাবে ফেটে নিতে হয়। এরপর চড়া রোদে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে সব উপকরণ মুষ্টিতে চেপে চেপে বিশেষ কায়দায় তার ওপর রাখতে হয়। নির্দিষ্ট আকারের বড়াগুলো তখন দেখতেও চমৎকার লাগে। সর্বশেষ রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় ডালের বড়া। একই গ্রামের শিল্পী রানী জানান, সারা বছর এ বড়া তৈরি হলেও শীতকালই বড়া তৈরির মৌসুম। আশ্বিন থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত এই ছয় মাস বড়া বিক্রি হয় ব্যাপকভাবে। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ কেজি বড়া তৈরি করা যায়। প্রতি কেজি ডালের বড়া তৈরিতে খরচ পড়ে ১২০ টাকা। বিক্রি হয় ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে। এতে শীতকালে ঘরে মোটামুটি একটা আয় আসে।

রুপালি মহন্ত জানান, আমরা নিম্নআয়ের কিছু মানুষ ঐতিহ্যপূর্ণ পৈতৃক পেশা বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে কোনোরকমে এ শিল্প আজও ধরে রেখেছি। ইচ্ছে থাকলেও এই শিল্পকে প্রসারিত করতে পারছি না। সরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। চাঁদখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান জানান, আদি পেশার ওই পরিবারগুলো এতে সম্পৃক্ত থেকে বাড়তি আয় করে সংসারে কিছুটা সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। এ ডালের বড়া দিয়ে মাছ, বেগুন, লাউ, ফুলকপি, আলুর তরকারি রান্না করে তৃপ্তির সঙ্গে খাওয়া যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর