রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আগেই জানানো হয়েছিল সন্ত্রাসীদের নাম!

কুমিল্লায় কাউন্সিলরসহ দুই হত্যা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লায় গত সোমবার নিজ কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হওয়া কাউন্সিলর সোহেল আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন সন্ত্রাসীদের নাম। তিনি তাদের মোবাইল নম্বরসহ নামের তালিকা নেতাদের কাছে জমা দিয়ে জানিয়েছিলেন, এদের হাতে তিনি খুন হতে পারেন। এর তিন দিন পর তিনি খুন হন। এদিকে গতকাল পাওয়া খবরে জানা গেছে, কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল (৫০) ও তার সহযোগী হরিপদ সাহা (৫৫) হত্যার ঘটনায় পুলিশ আরও দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত জানান, হত্যাকান্ডের দিন তিনেক আগে কাউন্সিলর সোহেল কম্পিউটারে টাইপ করে সন্ত্রাসীদের মোবাইল নম্বর ও তাদের কার বিরুদ্ধে কী মামলা আছে- এমন একটি তালিকা করে আমাকে দিয়েছিলেন। সোহেল বলেছিলেন, তালিকায় থাকা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারকে যেন অবহিত করি। কারণ সোহেল শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তালিকায় থাকা সন্ত্রাসীরা যে কোনো মুহূর্তে তার ক্ষতি করতে পারে। তালিকা পাওয়ার পর কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নে আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। তবে এত দ্রুত এমন কিছু হবে তা স্বপ্নেও চিন্তা করিনি। আমরা দায়ীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’ কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, এ বিষয়ে পরে শুনেছি। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।

আরও দুজন গ্রেফতার : কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল ও আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা মামলায় আরও দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- মামলার ৬ নম্বর আসামি মো. আশিকুর রহমান রকি (২৯) ও ৭ নম্বর আসামি মো. আলম মিয়া (৩০)। গতকাল সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেনে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন। তিনি বলেন, আশিকুর রহমান রকিকে লালমনিরহাটের চন্ডীবাজার এবং মো. আলম মিয়াকে কুমিল্লা সদর উপজেলার বড়জালা এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ দুজনকে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর আগে এ মামলায় ৯ নম্বর আসামি মাসুমকে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে জেলার চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগের দিন বুধবার মামলার ৪ নম্বর আসামি মো. সুমনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ নিয়ে মামলায় চারজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত সোহেলের ভাই সৈয়দ মোহাম্মদ রুমনের দায়ের করা মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২২ নভেম্বর নগরীর পাথরিয়াপাড়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন দুজন। কাউন্সিলর সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। নিহত হরিপদ সাহা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এ ছাড়া এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও পাঁচজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর