সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ওমিক্রন ঠেকাতে সব বন্দরে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওমিক্রন ঠেকাতে সব বন্দরে সতর্কতা

দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে দেশের সব বন্দরে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। ওমিক্রন ঠেকাতে বন্দরে সতর্কতাসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছে করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) মো. নাজমুল ইসলাম গতকাল নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বন্দরগুলোয় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য বলা হয়েছে। ডব্লিউএইচও ইতিমধ্যে ওমিক্রন ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেছে। আমরাও এ বিষয়ে সতর্ক আছি। গত ৩০ দিনে দেশে করোনা শনাক্তের নিম্নহার দেখা গেছে। এ হার ২ শতাংশের নিচে থেকেছে। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই। মাস্ক পরাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।

গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বতসোয়ানা, ইসরায়েল, হংকং, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইতালিতেও নতুন এ ধরনের সন্ধান মিলেছে। ডব্লিউএইচও করোনার নতুন ধরনের নাম দিয়েছে ‘ওমিক্রন’। ধারণা করা হচ্ছে, করোনার আগের সব ধরনের চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রমক। তবে ওমিক্রন করোনার অন্য ধরনের তুলনায় কম নাকি বেশি মারাত্মক, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। ওমিক্রন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যেসব দেশে সংক্রমিত হয়েছে সেসব দেশ থেকে যাত্রী আগমন বন্ধের সুপারিশ করেছে কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কোনো ব্যক্তির এসব দেশে ভ্রমণের সাম্প্রতিক (বিগত ১৪ দিনে) ইতিহাস থাকলে তাকে বাংলাদেশে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কভিড-১৯ পরীক্ষায় পজিটিভ হলে তাকে আইসোলেশনে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি পোর্ট অব এন্ট্রি (স্থল, নৌ, বিমান ও রেলপথ) স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করে পরীক্ষা জোরদার করতে বলা হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও কঠোরভাবে পালন করা (স্কুল-কলেজসহ), চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা ও বিভিন্ন (রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়) সমাবেশে জনসমাগম সীমিত করতে বলা হয়েছে। কভিড-১৯ পরীক্ষায় জনগণকে উৎসাহিত করতে বিনামূল্যে পরীক্ষা করারও সুপারিশ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ইতিমধ্যেই বন্দরগুলোকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে।

হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি ফ্লাইট নেই। তাই ফ্লাইট বন্ধের এখনো কোনো পরিকল্পনা নেই। নতুন ভ্যারিয়েন্ট ঠেকানোর ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আমরা একটা নির্দেশনা পেয়েছি। আফ্রিকার দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ব্যাপারে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। বিদেশ ফেরত যাত্রীদের স্ক্রিনিংয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। 

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। বন্দরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। আফ্রিকার দেশগুলো থেকে আসা জাহাজগুলোর জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী জাহাজ ও নাবিকদের বন্দোবস্ত করা হবে। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভারতফেরত যাত্রীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মেনে চলতে বলা হয়েছে। ইমিগ্রেশনে ঢুকতে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক না থাকলে যাত্রীদের বিনামূল্যে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশন কাউন্টারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর