সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

এক সাক্ষীর আত্মহত্যা অন্যজনকে হুমকি

পুলিশ ফাঁড়িতে যুবক খুন, তামিল হয়নি ক্রোকের পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার আসামি আবদুল্লাহ আল নোমানের মালামাল ক্রোকের পরোয়ানা তামিল হয়নি। গতকাল পরোয়ানা তামিলের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু কোম্পানীগঞ্জ থানা থেকে পরোয়ানা তামিলের ব্যাপারে কোনো কাগজপত্র না আসায় শুনানি হয়নি। এদিকে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে নিহত রায়হানের মা অভিযোগ করেন, মামলার অন্যতম এক সাক্ষী ‘আত্মহত্যা’ করায় এবং অপর এক সাক্ষীকে অব্যাহত ‘হুমকি’ দেওয়ায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে তিনি শঙ্কিত। তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন। গতকাল মামলার ধার্য তারিখে আদালতে আসেন রায়হানের মা সালমা বেগম। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায়হানকে কাষ্টঘরের চুলাই লালের ঘর থেকে সুস্থভাবে ধরে আনে পুলিশ। তাকে মারধর করে রায়হানকে ধরে আনা হয়। চুলাই লাল হলো এ মামলার প্রথম সাক্ষী। সে মারা গেছে। পুলিশ বলছে, সে নাকি ‘আত্মহত্যা’ করেছে। আমি সঠিক জানি না সে আত্মহত্যা করেছে, না অন্য কোনোভাবে মারা গেছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার আরেক সাক্ষী পুলিশ ফাঁড়ির পার্শ্ববর্তী কুদরতউল্লাহ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় বসবাসকারী হাসান। ঘটনার পর সে জানিয়েছিল, সারা রাত তিনি রায়হানের কান্নাকাটি ও চিৎকার শুনেছে। সে এখন ঢাকায় আছে। তাকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কে বা কারা হুমকি দিচ্ছে তা খুঁজে দেখা দরকার।’ রায়হানের মা বলেন, ‘হাসানকে হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে, তুমি কোথায় আছ? তুমি সাক্ষী দিতে যাবে না। তাকে নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় হাসানও ভয়ে আছে।’ তবে হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি হুমকি পাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, ‘এক সাক্ষীর রহস্যজনক মৃত্যু, অন্য সাক্ষীকে হুমকি। এ অবস্থায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এতে বোঝা যাচ্ছে আসামিরা জেলে থাকলেও তারা বাইরে প্রভাব খাটাচ্ছে। এ অবস্থায় আমি ও আমার পরিবারও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’ প্রসঙ্গত, গত বছর ১১ অক্টোবর গভীর রাতে সিলেট শহরের আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর