মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মহামারীর কারণে প্রকোপ আরও বেড়েছে

কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী

মহামারীর কারণে প্রকোপ আরও বেড়েছে

মহামারীর কারণে সারা বিশ্বের মানুষই এখন মানসিক সমস্যায় ভুগছে। বিশেষ করে যেসব দেশে দীর্ঘ সময়ের জন্য লকডাউনসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে সেসব দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার এ প্রকোপটা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে বিষণ্নতা খুবই স্বাভাবিক। এরপর উদ্বিগ্নতার বিভিন্ন ধরন দেখা যাচ্ছে। যাদের আগে মানসিক রোগ ছিল তাদের এ সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে আর যাদের মানসিক সমস্যা ছিল না তাদের নতুন করে তৈরি হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ বিষয়ে জরিপ হয়েছে। আর এতে দেখা যাচ্ছে যে, সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মানসিক রোগ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর আত্মহত্যা-সংক্রান্ত জরিপে দেখা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে এসে আত্মহত্যার ঘটনা ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে বিষণ্নতা। করোনাকালে যত সংখ্যক মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এর চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। এ অধ্যাপক বলেন, আমরা করোনাভাইরাসকে পরিবর্তন করতে পারব না। আবার এটি শিগগিরই চলেও যাবে না। একে নিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে। এর বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলো নিশ্চিত করেই আমাদের কাজ করতে হবে। কাজে ফিরে যাওয়ার পর কিছু সমস্যা হয়তো কমে যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু খুলে গেছে, আশা করছি তরুণ-তরুণী ও শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো থাকবে। বন্ধুদের সঙ্গে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হবে। শ্রেণিকক্ষে পড়ালেখা হবে। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে যাদের সমস্যা তৈরি হয়েছে তাদের এ মুহূর্তে সেবাদান করা জরুরি। আর সরকারিভাবেও কিছু উদ্যোগ নেওয়া দরকার, যাতে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের প্রেক্ষাপটে সবকিছুতেই জীবন খুব ‘স্ট্রেসফুল’। বিশেষ করে ঢাকায় মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যা দেশের অন্যান্য জায়গার চেয়ে বেশি। ঢাকায় রাস্তায় বের হলেই মানসিক চাপ শুরু হয়। এগুলো কিছুটা সমাধান করলেও দৈনন্দিন জীবনে মানুষের যে অহেতুক চাপ তা কমে যাবে। আর যারা অসুস্থ এবং যাদের সেবা দরকার তাদের বাসায় বসে থাকলে হবে না। অনেকেই আছেন যারা মানসিক সমস্যা নিয়ে বাসায় বসে রয়েছেন। তাদের জন্য বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবা আছে। তারা যদি সশরীরে এ সেবা নিতে চান সেই সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থা আছে। মানসিক রোগীরা কোথায় গেলে সেবা পাবেন তা মানুষকে জানাতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর