শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দুম্বার খামারটি এখন মডেল

রাহাত খান, বরিশাল

দুম্বার খামারটি এখন মডেল

মরু অঞ্চলের প্রাণী দুম্বা পালন করে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছেন বরিশালের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল কবির বাদল। ভবনের ছাদে এবং বাড়ির উঠানে খাঁচা তৈরি করে দুম্বা পালন করে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। ২০১৭ সালে মাত্র ৪টি দুম্বা দিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। চার বছরের ব্যবধানে বাদলের খামারে দুম্বার সংখ্যা এখন ৬০টি। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আশপাশের অনেকেই দুম্বার খামার করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বাদলের খামারের সফলতাকে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বরিশাল প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

মো. রিয়াজুল কবির বাদল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মেহেরপুর থেকে ১টি পুরুষ ও ৩টি মহিলা দুম্বা কিনে আনেন পালনের জন্য। পরে নরসিংদী ও খুলনা থেকে আরও ২টি পুরুষ এবং ৫টি মহিলা দুম্বা কিনে খামারে পালন শুরু করেন। এতে তার ১০ লাখ টাকা খরচ হয়। কিছুদিন আগে ৭ লাখ টাকায় ৬টি দুম্বা বিক্রি করেন বাদল। এখন তার খামারে দুম্বার সংখ্যা ৬০টি। যার বাজার মূল্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা। দিন দিন দুম্বার সংখ্যা বাড়ছে তার খামারে। শখের বশে দুম্বা পালন শুরু করে চার বছরের ব্যবধানে এখন এটিকে সফল ব্যবসায় রূপ দিয়েছেন তিনি। এই মরু প্রাণী পালনে খুব একটা বেগ পেতে হয় না বলে জানিয়েছেন বাদল। তিনি বলেন, ছাগল পালনের মতো দুই বেলা দানাদার ঘাস আর দানাদার পশুখাদ্য এদের নিয়মিত খাবার। সব সময় মেজাজ বিগড়ে থাকায় মাদি (স্ত্রী) দুম্বা থেকে আলাদা রাখা হয় পুরুষ দুম্বাগুলোকে। মরু অঞ্চলের এই প্রাণী দলবদ্ধভাবে থাকতেই বেশি পছন্দ করে। দুম্বাগুলোকে সপ্তাহে এক দিন গোসল করানো হয়। রোগবালাইয়ের তেমন কোনো বিড়ম্বনা নেই দুম্বা পালনে। প্রাপ্তবয়স্ক মাদি দুম্বা প্রতি ৮ মাসে একটি কিংবা দুটি ছানা প্রসব করে। প্রজননের জন্য একটি পুরুষ দুম্বা ২০টি নারী দুম্বার সঙ্গী হয়ে থাকে। ৬০টি দুম্বার খাবার ও পরিচর্যাকারী ৬ জন কর্মচারীর বেতন ও খাবারসহ মাসিক ব্যয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। দুম্বা পালনে পূর্বাভিজ্ঞতা না থাকলেও গত কয়েক বছরে সবকিছু আয়ত্ত করে ফেলেছেন ৬ কর্মচারী। মাত্র চার বছরে দুম্বা পালনে বাদলের ঈর্ষণীয় বাণিজ্যিক সাফল্য অনুপ্রাণিত করছে প্রান্তিক পশু পালনকারীদের। দূর-দূরান্তের অনেকেই বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক রোডে বাদলের খামার দেখতে আসছেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দুম্বা পালনের নানা দিক সম্পর্কে জেনে নিচ্ছেন। এই সাফল্যে অনেকেই দুম্বার খামার করার কথা ভাবছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. নুরুল আলম বলেন, রিয়াজুল কবির বাদলের দুম্বার খামার এখন প্রান্তিক প্রাণী পালনকারীদের কাছে মডেল। তার খামারের সাফল্য নতুন করে ভাবাচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগকে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে দুম্বা পালন লাভজনক ব্যবসা হবে বলেও তিনি আশা করেন।

সর্বশেষ খবর