বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সন্ন্যাসী গ্রামের হাজীপাড়ায় সৌদি আরবের খেজুর চাষ করে কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছেন অ্যাডভোকেট দিহিদার জাকির হোসেন। ১৫ একর মাছের খামারের বেড়িবাঁধে এখন আড়াই হাজার সৌদি খেজুর গাছ লাগিয়ে মাত্র দুই বছরেই ফল হয়েছে শতাধিক গাছে। প্রতি গাছে গড়ে আধা মণের অধিক খেজুর জন্মেছে। রামপালের মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের হাজীপাড়ায় ২০১৪ সালে নিজের ১৫ একর জমিতে নয়টি পুকুরে মাছের খামার করেন জাকির হোসেন। খননকৃত পুকুরের বেড়িবাঁধের উঁচু জমিতে পেঁপে, কুলসহ বিভিন্ন ফলদ গাছ রোপণ করেন। কিন্তু লবণাক্ততার কারণে এসব গাছে ফলন ভালো না হওয়ায় রাস্তার পাশে দেশি খেজুরগাছে ফলন দেখে একপর্যায়ে সৌদির খেজুর চাষের বিষয়টি মাথায় আসে তার। ২০১৯ সালে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে ২০০ ও  নরসিংদী থেকে আরও ১০০ সৌদি খেজুরের চারা এনে বেড়িবাঁধের জমিতে রোপণ করেন তিনি। এক বছরের মধ্যে অন্তত আরও ২০০ গাছে ফল দেওয়া শুরু হবে। বর্তমানে এই খামারে আজোয়া, মরিয়ম, সুকারি, আম্বার ও বারহী জাতের ২৫০০ খেজুরগাছ রয়েছে।

খামারটির শ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালে সৌদি খেজুরের চারা লাগালে এলাকার মানুষ বিদ্রুপ করা শুরু করে। কৃষি বিভাগও খামারটি দেখতে আসতেন না। শতাধিক গাছে ফল এসেছে, গাছ থেকে খেজুরের ছড়া কাটা হচ্ছে। অনেকেই এখন দেখতে আসছেন। খামারি জাকির হোসেন জানান, ২০১৯ সালে ‘রামপাল সৌদি খেজুর বাগান’ নামে খামার শুরু করি। ময়মনসিংহ ও নরসিংদী থেকে আনা ৩০০ খেজুরগাছ লাগাই। এলাকার লোকজন আমাকে পাগল বলতেও ছাড়েনি। মাত্র দুই বছরের মধ্যে আমি সফল হয়েছি। বর্তমানে শতাধিক খেজুরগাছের ফল কাটা শুরু করেছি। এক বছরের মধ্যে অন্তত আরও ২০০ গাছে ফল দেওয়া শুরু হবে। এ বছরই অনেক গাছে ২৫-৩৩ কেজি খেজুর হয়েছে।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সৌদির খেজুর মরুভূমির ফসল। লবণাক্ত জলাভূমিতে এ খেজুর চাষে জাকির হোসেন সফলতা পেয়েছেন। এ খেজুরের স্বাদ, পুষ্টিগুণ ও উৎপাদনের পরিমাণ ঠিক থাকলে লবণাক্ত পানি অধ্যুষিত এলাকার জন্য এটি একটি দৃষ্টান্ত। তার এ উদ্যোগকে আরও বেশি সফল করার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে।