বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার আবারও বাড়ছে। ১৮ ডিসেম্বর ১ শতাংশের নিচে শনাক্ত হারের খবর আসায় জনমনে কিছুটা স্বস্তি আসে। তবে, পরের তিন দিন টানা বেড়েছে এই হার। এর মধ্যে ১৯ ডিসেম্বর ১.২২ শতাংশ, ২০ ডিসেম্বর ১.৩০ শতাংশ ও গতকাল ১.৩৯ শতাংশ শনাক্ত হারের খবর আসে। এদিকে ছয় দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় এবং শনাক্তের হার ছিল আট দিনের মধ্যে সবচেয়ে  বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২০ হাজার ৯০৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৯১ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সবশেষ এর চেয়ে বেশি ২৯৭ জন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল গত ১৫ ডিসেম্বর। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ১.৩৯ শতাংশ, যা ১৩ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৭১ জন। মারা গেছেন ২৮ হাজার ৫১ জন। গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৫.৩৪ শতাংশ শনাক্তের হার ছিল ঢাকার পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ বিভাগে।

আমরা লকডাউন চাচ্ছি না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, ‘ইউরোপের অনেক দেশে লকডাউন জারি করা হলেও সরকার এখন এমন পদক্ষেপে যেতে চাইছে না। আমরা আমাদের দেশে লকডাউন চাচ্ছি না’। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। দেশে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নেই, কিন্তু করোনা তো (অন্য ভ্যারিয়েন্ট) আছে! ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকেও যদি আমরা রক্ষা পেতে চাই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, যে কাজটি আমরা করছি না।’ এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সমালোচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মানুষ যেন বেপরোয়াভাবে না ঘুরে বেড়ায়; কিন্তু সেটা হচ্ছে। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানগুলো কীভাবে হয়? কক্সবাজারে লাখ লাখ মানুষ যাচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। বিয়ে হচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। তাহলে সংক্রমণ বাড়ার সুযোগ তো রয়েছে! আমরা এ বিষয়ে দুঃখিত।’ এদিকে করোনা টিকার জন্য নিবন্ধনে ব্যবহৃত সুরক্ষা অ্যাপ হালনাগাদ হওয়ার পর সারা দেশে বুস্টার ডোজ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সব জায়গায় বুস্টার ডোজ দিতে হলে আমাদের সুরক্ষা অ্যাপের হালনাগাদের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা জানিয়েছি আইসিটি মন্ত্রণালয়কে তারা কাজ করছে। আমাদের জানিয়েছে এ মাসের শেষের দিকে তারা কাজটা সম্পন্ন করতে পারবে। তারপর আমাদের বুস্টার ডোজের কার্যক্রম পূর্ণগতি লাভ করবে।’ তিনি বলেন, ‘এখন যারা বুস্টার ডোজ নেবেন তাদের জন্য আমরা একটা ব্যবস্থা রেখেছি। ষাটোর্ধ্ব এবং সম্মুখসারির মানুষ টিকা কার্ড নিয়ে এলে আমরা বুস্টার ডোজ দিয়ে দেব। বিশেষ করে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ সবাইকে আমরা দেব। বুস্টার ডোজ কীভাবে দেওয়া হবে সে-সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এটা আমরা জানিয়ে দেব। কখন-কীভাবে বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে আমি ডিজি অফিসকে জানিয়ে দিয়েছি। তারা জনগণকে অবহিত করবে।’ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখনো আমাদের দেশে সেভাবে ওমিক্রন ছড়ায়নি। নতুন এ ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে যেসব কাজ করতে হবে সেদিকে আমাদের মনোযোগ বেশি। বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা পর্যন্ত করা হয়েছে। বর্ডারে একই ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেসব হাসপাতালে রোগী বেশি আছে সেখানে জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে। ওমিক্রন কারও শরীরে থেকে থাকলে তা শনাক্ত করা যাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর