বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
পুলিশ ফাঁড়িতে যুবক খুন

নোমানের অনুপস্থিতিতে শুরু হচ্ছে বিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

ক্রোকের জন্য বাড়িতে গিয়ে আবদুল্লাহ আল নোমানের কোনো মালামাল পায়নি পুলিশ। এবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেবে আদালত। এরপর আইন অনুযায়ী নোমানের অনুপস্থিতিতেই শুরু হবে সিলেট মহানগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান আহমদ নামে যুবক খুনের মামলার বিচারকাজ।

গতকাল মামলার ধার্য তারিখে নোমানের ব্যাপারে আদালত এমন আদেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম এ ফজল চৌধুরী। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। তিনি ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফ্রান্সে অবস্থানরত নোমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। মামলার অন্য পাঁচ আসামি বর্তমানে কারান্তরিন রয়েছেন। তারা সবাই পুলিশ সদস্য। বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম এ ফজল চৌধুরী জানান, পলাতক আসামি আবদুল্লাহ আল নোমানের মালামাল ক্রোক করতে হুলিয়া ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পায়নি। তার কোনো মালামালও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ। এম এ ফজল আরও বলেন, গতকাল ধার্য তারিখে আদালত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপানোর নির্দেশ দিয়েছে। কমপক্ষে দুটি পত্রিকায় নোমানের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি ছাপানো হবে। এর মাধ্যমে তাকে অবহিত করা হবে যে তিনি আদালতে হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ শুরু হবে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ শিগগিরই হবে বলেও জানিয়েছেন এই আইনজীবী। গতকাল সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে রায়হান হত্যা মামলায় কারান্তরিন পাঁচ পুলিশ সদস্যকে হাজির করা হয়। তারা হলেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, টুআইসি এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ। রায়হানকে নির্যাতনের সময় এদের সবাই বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। পরে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর বাইরে মামলার আসামি করা হয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বুড়িডহর গ্রামের ইসরাইল আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল নোমানকে।

এসআই আকবরের সহযোগিতায় ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পরিবর্তনের অভিযোগে তাকে আসামি করা হয় মামলায়। নোমান বর্তমানে ফ্রান্সে অবস্থান করছেন বলে নিজেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

সিলেটের শিশু রাজন ও বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যার বিচারের প্রসঙ্গ টেনে সালমা বেগম বলেন, ‘রাজন হত্যার বিচার যেভাবে দ্রুত হয়েছে, আমি চাই রায়হান হত্যার বিচারও একইভাবে হোক। রায়হানকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে যারা খুন করেছে তাদেরও যেন সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হয়।’ মামলার একমাত্র পলাতক আসামি নোমানকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়ে রায়হানের মা বলেন, ‘এর আগে রাজন হত্যা মামলার আসামিকেও সৌদি আরব থেকে সরকার ধরে নিয়ে এসেছে। সরকার চাইলেই নোমানকে দেশে ফেরাতে পারবে।’ প্রসঙ্গত, গত বছর ১১ অক্টোবর ভোরে সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সর্বশেষ খবর