শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নতুন বছরের আমেজে পর্যটকমুখর পাহাড়

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

নতুন বছরের আমেজে পর্যটকমুখর পাহাড়

আজ থার্টিফার্স্ট নাইট। তাই নতুন ইংরেজি বছর বরণ ও বছরের শেষ মুহূর্তটা স্মরণীয় করে রাখতে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়মুখী হচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটক। ফলে পাহাড় এখন পর্যটকমুখর। বর্তমানে ৪ থেকে ৫ হাজারেরও অধিক পর্যটক অবস্থান করছেন রাঙামাটিতে। থার্টিফার্স্টের দিন সাপ্তাহিক ছুটি  হওয়ায় লাখো মানুষের অরণ্যে পরিণত হবে পাহাড়, এমন ধারণা করছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। শুধু রাঙামাটি নয়, এমন পর্যটক উৎসবে মেতেছে অপর দুই পার্বত্য  জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। সবুজ অরণ্যের রাজ্য পার্বত্যাঞ্চল এখন পর্যটন উৎসবে মেতেছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলো মুখর পর্যটকদের পদচারণায়। পর্যটক আগমনে তিল পরিমাণ জায়গা খালি নেই কোথাও। পার্বত্যাঞ্চলের পর্যটন সূত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বর মাস থেকে থার্টিফার্স্ট নাইট ও নতুন বছর উপলক্ষে তিন পার্বত্য জেলার সবগুলো আবাসিক হোটেল,  মোটেল, সরকারি রেস্ট হাউসগুলো বুকিং হয়ে গেছে। কোথাও রুম খালি নেই। জানুয়ারিজুড়ে আছে অগ্রিম বুকিংও। সড়কে সড়কে পিকনিক পার্টি ও ভ্রমণপিপাসুদের গাড়ির বহর যেন থামছে না। ভিড় যেন লেগেই আছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে প্রকৃতির টানে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আগত পর্যটকরা রাঙামাটির ঝুলন্ত  সেতু, শুভলং ঝরনা, পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো পার্ক ও কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়ক ও ফুরামন পাহাড়সহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছে। আবার কেউ প্রকৃতিতে উজাড় করে দিচ্ছে নিজেকে।

স্থানীয়রা বলছেন, বিকালের সূর্যের সোনালি রং যখন ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক তখনই মানুষের ভিড় জমে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুতে। কারণ শীতের উষ্ণতায় হ্রদ, পাহাড় আর কুয়াশার লুকোচুরি খেলার দেখা মেলে এখানে। তাতেই মুগ্ধ পর্যটকরা।

জানা গেছে, রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স, ডিসি বাংলো পার্ক, পলওয়েল পার্ক, শুভলং ঝরনা, আসামবস্তি সড়ক, প্যাদা টিং টিং, বরগ্যাং ও ফুরামন পাহাড়ের মতো অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে রাঙামাটিতে। এসব স্থানে পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট আর বিনোদন কেন্দ্র।

 রেস্টুরেন্টগুলোতে মিলছে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বিভিন্ন খাবার। যার প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ থাকে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে আছে এ অঞ্চলের মানুষের  দেশীয় পোশাক ও পণ্যসামগ্রী। যারা ঘুরতে আসছেন তারাও ছুটে যাচ্ছেন এসব শপিং মলে। ফলে চাঙা হয়ে উঠছে স্থানীয় ক্ষুদ্র পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলো। ব্যস্ত সময় পার করছেন কাপ্তাই হ্রদের নৌ-ট্যুরিস্ট বোট ব্যবসায়ীরা। দিনরাত ছুটছে তারা কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণপিপাসুদের নিয়ে।

রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, শীতের শুরু থেকে এখানে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে ৩ হাজার পর্যটক আসছেন এখানে। নতুন বছর ঘিরে রাঙামাটিতে বেড়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। পর্যটকদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রচুর। রাঙামাটি কমপ্লেক্সের পর্যটন মোটেলের সবগুলো রুম ১০০ ভাগ বুকিং রয়েছে। আর ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটক আসছে অগণিত। শুধু আশপাশের জেলার পর্যটকরাই নন-এখানে আসছেন বিদেশি পর্যটকও। তাদের জন্য নিরাপত্তার কোনো কমতি  নেই। পর্যটক কেন্দ্রগুলোতে আছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। তিনি আরও বলেন, এ বছর আমাদের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ কোটি। কারণ প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার পর্যটক আসছেন এখানে। এভাবে পর্যটক আসা অব্যাহত থাকলে আশা করি এবার পর্যটন কমপ্লেক্সে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে কয়েক গুণ।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর