রবিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থীদের এখন ভালো কলেজে ভর্তির অপেক্ষা

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন

আকতারুজ্জামান

এসএসসি ও সমমান শ্রেণিতে উত্তীর্ণের পর এবার ছাত্রছাত্রীদের যুদ্ধ পছন্দের কলেজে ভর্তি হওয়ার। দেশের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। এ শিক্ষার্থীরা এখন কলেজে ভর্তির জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দেশে কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণিতে পর্যাপ্ত আসন থাকলেও মানসম্মত কলেজের সংকট রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের অপেক্ষা এখন মানসম্মত কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়ার।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ড ঢাকা সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। এগুলোতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে প্রায় ২৮ লাখ। এর মধ্যে তুলনামূলক ভালোমানের কলেজের সংখ্যা প্রায় ২০০। এসব কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার। এ কলেজগুলোতে ভর্তি হতেই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি থাকে। কিন্তু এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। সে হিসেবে এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীরাও তুলনামূলক ভালোমানের এ কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাবে না।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী প্রতিবেদককে বলেন, ভর্তি নিয়ে তো যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ভালোমানের কলেজগুলোতে। শিক্ষার্থীরা ভালোমানের কলেজে পড়তে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। ভর্তিচ্ছু আর অভিভাবকদের চিন্তা নিরসন করার দায়িত্ব সরকারের। সারা দেশে কলেজগুলোতে ভর্তিযোগ্য অনেক আসন রয়েছে। কিন্তু আসনের সংকট রয়েছে ভালোমানের কলেজগুলোতে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মান উন্নত করতে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে হবে। নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission.gov.bd) ভর্তি আবেদন করতে পারবে। ৯৫ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেধার ভিত্তিতে ভর্তির পরও ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন কোটায় ভর্তি করা হবে। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা নেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। বিজ্ঞান গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত/জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করা হবে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের ক্ষেত্রে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হবে। অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে মাত্র ১৫০ টাকা ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি কলেজে এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজ মনোনয়ন দেওয়া হবে।

এমপিওভুক্ত কলেজের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, ঢাকার বাইরের মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ে ২ হাজার টাকা ও উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা আদায় করবে কলেজগুলো। তবে নন এমপিও ও আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটনে বাংলা ভার্সনে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে ৮ হাজার টাকা; অন্য মেট্রোপলিটনে বাংলা ভার্সনে ৫ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে ৬ হাজার টাকা; জেলা পর্যায়ে বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার টাকা; এবং উপজেলা বা মফস্বল পর্যায়ে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা নিতে পারবে কলেজগুলো। সরকারি কলেজগুলো সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী ফি আদায় করবে। কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফি’র অতিরিক্ত কোনো অর্থ গ্রহণ করা যাবে না। কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিক নিশ্চায়ন করার সময় প্রতি শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বোর্ডে মোট ২২৮ টাকা পরিশোধ করতে হবে।  নীতিমালা অনুযায়ী, ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন শুরু হবে ৮ জানুয়ারি। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা কলেজগুলোতে আবেদন করতে পারবে। প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হয় ২৯ জানুয়ারি। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। এ আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। ১৩ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় দফায় আবেদন গ্রহণের পর ১৫ ফেব্রুয়ারি ফল প্রকাশ করা হবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কলেজগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম চলবে। ২ মার্চ থেকে কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর