সোমবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রের কাঠামোগত পদ্ধতির জায়গায় উন্নতি হচ্ছে না

------- জিয়া রহমান

রাষ্ট্রের কাঠামোগত পদ্ধতির জায়গায় উন্নতি হচ্ছে না

বিদায়ী বছরে মানবাধিকার ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা প্রশ্নের মুুখে পড়েছে সরকার। এ বছরও একই বিষয়ে সরকার চ্যালেঞ্জে পড়বে কি না- জানতে চাইলে বিশিষ্ট অপরাধ বিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান  অধ্যাপক জিয়া রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক নীতি ও তার সঙ্গে আমরা স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। মধ্য আয়ের দেশের কাতারে আমরা যেতে চাইলে আমাদের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ সুশাসন।

তিনি বলেন, সুশাসনের বড় নির্দেশন হচ্ছে মানবাধিকার রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণ বা আইনশৃঙ্খলা ভালো রাখা। নানা কারণে আমাদের আইন প্রয়োগের পদ্ধতি এখনো আশানুরূপ অত্যাধুনিক হয়নি। কলোনিয়াল সেটআপ এখনো রয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের সংস্কৃতি এখনো এর থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারেনি। অতীতেও আমরা সমালোচনা করেছি। আসলে মলম দিয়ে কোনো কাজ হবে না। কাঠামোগত সংস্কার যদি না করা হয়, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের দিকে যদি আমরা না যেতে পারি তাহলে মানবাধিকার সমুন্নত হবে না। আমি মনে করি, নানান রকম কথা হচ্ছে, গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে- এতে একটা জনমত তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় আমরা প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। সরকার মানবাধিকার রক্ষায় যে খুব ভালো কাজ করছে সেটা অবশ্যই না। আমাদের রাষ্ট্রের কাঠামোগত পদ্ধতিসহ বিভিন্ন কারণে সেই জায়গাগুলোর উন্নতি হচ্ছে না। সরকারের যদি আরও জনসমর্থন পেতে হয়, তাহলে এই জায়গার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধান করতে হবে। এর জন্য দরকার কাঠামোগত সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন। এই দুয়ের সংমিশ্রণ হলে সবক্ষেত্রে যে রাজনীতিকীকরণ- সেটা হবে না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে এই কাজগুলো বিরোধী দলসহ প্রেসার গ্রুপ যারা আছে তারাও চিহ্নিত করে দিতে পারে। তারা হয়তো এখন বলছে সরকারের মানবাধিকার খারাপ, সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে কিন্তু তারা (প্রেসার গ্রুপ) কী করবে; তাদের পলিসি কী সেটাও বলছে না। একদল ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর আরেক দল ক্ষমতায় আসলেও যদি রাষ্ট্রের পদ্ধতিগত পরিবর্তন না হয়, রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী আছে- তাদের চরিত্র পরিবর্তন না হলে- শুধু আমরা বলেই যাব, এটা খারাপ, এটা করা যাবে না। কিন্তু এর থেকে উত্তরণ ঘটবে না। জিয়া রহমান আরও বলেন, রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো দেখি রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে, বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়াচ্ছে, নানা সমীকরণ হচ্ছে, এটা অনেক বেশি হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে সরকার লম্বা একটা সময় ক্ষমতায় থাকায়। আমরা মনে করি সবক্ষেত্রে এক ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। এই ঘোলাটে পরিস্থিতি থেকে যে কোনো জিনিস করতে পারে বা নেতিবাচক দিকে চলে যেতে পারে। তাই আমি মনে করি বিষয়গুলো চিহ্নিত করে সরকার উচিত মানবাধিকার সমুন্নত রাখা ও আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণে বাস্তবতা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

সর্বশেষ খবর