বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
লাকীর দুর্নীতি অনুসন্ধান

শিল্পকলার আয় ব্যয়ের তথ্য চেয়ে দুদকের নোটিস

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রাপ্ত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গত দুই অর্থবছরের বাজেট, ব্যয় এবং ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের নথিপত্র চেয়ে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (ডিজি) লিয়াকত আলী লাকীকে নোটিস পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই নোটিস পাঠানো হয় বলে দুদকের জনসংযোগ শাখা থেকে জানানো হয়েছে।

দুদকের নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদকের অনুসন্ধানকারী টিমের কাছে সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি বা রেকর্ডপত্র আগামী ১১ জানুয়ারির মধ্যে সরবরাহ করার জন্য লিয়াকত আলী লাকীকে বলা হয়েছে। নোটিসে ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিল্পকলা একাডেমির বরাদ্দ বাজেট এবং ব্যয়-সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংবলিত নথির ফটোকপি ডিজির কাছে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ বাজেট এবং ব্যয়-সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংবলিত নথির ফটোকপি এবং অব্যয়িত ৩৫ কোটি টাকাসহ গত বছরের ৩০ জুন ব্যয়করণ-সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজন সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংবলিত নথির ফটোকপি চাওয়া হয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত ব্যয়-সংক্রান্ত বিভিন্ন ভাউচার, ক্যাশবই এবং শিল্পকলা একাডেমির নামে সোনালী ব্যাংক, সেগুনবাগিচা শাখা থেকে ব্যাংক স্টেটমেন্টের কপি চাওয়া হয়েছে শিল্পকলা ডিজির কাছে। গত সোমবার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য টিম গঠন করে দুদক। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে টিম গঠন করা হয় এবং পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক যুগ ধরে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা লিয়াকত আলী লাকী অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি তহবিল থেকে ২৬ কোটি টাকা তুলে নেন। অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হন। সেদিনই নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন শিল্পকলার ডিজি। ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২৬ কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে উত্তোলন করেন লাকী। পরস্পর যোগসাজশে এই অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

 

সর্বশেষ খবর