রবিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
দুই গারো কিশোরীকে গণধর্ষণ

মূল হোতা রিয়াদ গ্রেফতার, বেপরোয়া ছিল তার বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো সম্প্রদায়ের স্কুলপড়ুয়া দুই কিশোরীকে গণধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সোলায়মান হোসেন রিয়াদকে (২১) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গতকাল রাতে র‌্যাব-১৪-এর একটি দল ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে রিয়াদকে গ্রেফতার করে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রিয়াদ ১০-১৩ জনের একটি বাহিনী বা গ্যাং গড়ে তুলেছিল। তারা চলাফেরা করে কিশোর গ্যাং স্টাইলে। তাদের বয়স ১৯ থেকে ২১ বছর। স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদ থাকায় বেপরোয়া কর্মকান্ডে ফেভার পেত রিয়াদ ও তার বাহিনীর সদস্যরা। রিয়াদ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আগেও অনেক অভিযোগ ছিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তি হতো। রিয়াদের বাবা সাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এসব কারণে সে বারবারই পার পেয়ে যেত বলে মনে করা হচ্ছে।

২৭ ডিসেম্বর রাতে গারো সম্প্রদায়ের একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। হত্যারও ভয় দেখানো হয় তাদের। এ সময় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় তাদের সঙ্গে থাকা ১০ বছরের শিশু। এ ঘটনায় হালুয়াঘাট থানায় মামলা ৩০ ডিসেম্বর হয়। মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিকবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ করে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।

খন্দকার আল মঈন বলেন, লোকলজ্জার ভয় এবং প্রাণনাশের হুমকির কারণে কিশোরীদের পরিবার মামলা করতে দেরি করেছিল। রিয়াদ এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। ইভ টিজিং, উত্ত্যক্ত করা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে রিয়াদের বিরুদ্ধে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। র‌্যাব জানায়, ঘটনাস্থলে ১০ জন উপস্থিত থাকলেও ছয়জন ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত। বাকি চারজন পাহারা দিচ্ছিল। মূল হোতা রিয়াদের শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন নেই। শিশুবয়সে তিন বছর মাদরাসায় পড়াশোনা করেছিল সে। জড়িতদের পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে, যেন তারা তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করেন।

র‌্যাব আরও জানায়, রিয়াদ ও তার সহযোগীদের অত্যাচারে এলাকার স্কুলপড়ুয়া মেয়েরা অতিষ্ঠ। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার সোলায়মান হোসেন রিয়াদের নামে হালুয়াঘাট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মাদক চোরাচালান মামলা চলমান রয়েছে। ইতিপূর্বে সে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয় এবং কারা ভোগ করে। তার সহযোগী এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে এলাকায় মাদক কারবারি এবং গ্রুপভিত্তিক বিভিন্ন চুরি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর