সোমবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নিজের মামলায়ই গ্রেফতার সাবেক এসপি বাবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

নিজের মামলায়ই গ্রেফতার সাবেক এসপি বাবুল

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় এবার নিজের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) করা আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আবদুল হালিম। বাবুল আক্তার বর্তমানে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা আরেক মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। একই ঘটনায় দুই মামলায় গ্রেফতার হওয়াকে নজিরবিহীন দাবি করেছেন চট্টগ্রামের বিজ্ঞ আইনজীবীরা। এতে আসামিরা বিশেষ সুবিধা পাবেন বলে দাবি করেছেন তারা।

সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আবেদন করে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। শুনানি শেষে আদালত বাবুলকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেয়।’

বাবুল আক্তারের আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘মিতু হত্যায় একটি মামলার সূত্র ধরে পরের মামলাটি হয়েছে। পরের মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজন ব্যক্তি একই অভিযোগে দুই মামলায় আসামি হতে পারেন না। এ জন্য বাবুল আক্তারের বাদী হওয়া মামলায় গ্রেফতার না দেখানোর আবেদন করা হয়। তবে আদালত বাবুলের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার পেতে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব।’ বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন- চট্টগ্রাম চ্যাপটার সভাপতি জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘একই ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা যায় না। আবার এক আসামিকে দুবার গ্রেফতার করা যায় না। এক ঘটনায় পৃথক মামলায় পৃথকভাবে গ্রেফতার নজিরবিহীন ঘটনা। এ ঘটনার ফলে মামলার মেরিট নষ্ট হয়েছে। এতে মামলায় বিশেষ সুবিধা পাবেন আসামিরা।’

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘এক ঘটনায় দুবার মামলা কিংবা বিচার হতে পারে না। এক ঘটনায় দুবার গ্রেফতারের ফলে ন্যায়বিচারের ব্যত্যয় ঘটবে। এতে আসামির খালাস পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’ ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের পাঁচ বছর পর পিবিআইর তদন্তে এ খুনের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে। তাই পুরনো মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এরপর মিতুর বাবা মোশাররফ  হোসেন বাদী হয়ে নতুন করে মামলা দায়ের করেন, যাতে আসামি করা হয় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে বাবুল বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। পিবিআইর চূড়ান্ত প্রতিবেদনের আপত্তি জানিয়ে ১৪ অক্টোবর আবেদন করেন বাবুল। ২৭ অক্টোবর নারাজির আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে ৩ নভেম্বর বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর