সোমবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

রহস্যে ঘেরা রুবেল হত্যাকান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

লালমনিরহাট সদর এলাকা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া রুবেল খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি উত্তরের মিরপুর বিভাগের একটি দল গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে আবদুল জলিল এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আবদুল মান্নানকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের জবানির বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, মোবাইল ফোন চুরির দায়ে রাজধানীর মিরপুরে সরকারি বাঙ্লা কলেজে রুবেলকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে রুবেলকে লালমনিরহাটের বাড়ি থেকে                অপহরণের পর খুন করা হয়েছে। ৫ জানুয়ারি লালমনিরহাট সদর এলাকা থেকে নিখোঁজ হন রুবেল মিয়া। এরপর ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সরকারি বাঙ্লা কলেজের নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে তার অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে দারুস সালাম থানা পুলিশ। লালমনিরহাট সদর থানার রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট গ্রামের নুরুল আমীনের ছেলে রুবেল।

গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় দারুস সালাম থানার সরকারি বাঙ্লা কলেজের নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের পঞ্চম তলার ৮১৬ নম্বর কক্ষ থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় নিহতের চাচা ১৪ জানুয়ারি দারুস সালাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শুরু করে ডিবি মিরপুর জোনাল টিম। তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে গতকাল আবদুল জলিল ও আবদুল মান্নানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিবি উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার জানান, ৯ জানুয়ারি বিকাল আনুমানিক ৪টায় রুবেলকে সরকারি বাঙ্লা কলেজের নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে চোর সন্দেহে আটক করেন সেখানকার দারোয়ানরা। ইতিপূর্বে চুরি যাওয়া মোবাইল ও টাকা উদ্ধারের জন্য রুবেল মিয়াকে তারা রশি দিয়ে বাঁধেন। এরপর একই রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেন। এর ফলে ভিকটিম মৃত্যুবরণ করেন। ভয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে যান আবদুল জলিল ও আবদুল মান্নান। ডিবি মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি, নিহত রুবেল চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। তার জামার পকেটে একটি প্রেসক্রিপশনও আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তে নেমে মনে হয়েছে, এটা পরিকল্পিত মার্ডার নয়। তবু ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আরও জানা যাবে।’ রুবেলের বাবা নুরুল আমীন বলেন, ‘রুবেলকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। পারিবারিকভাবেই আমার একমাত্র ছেলে রুবেলকে ২ জানুয়ারি একই গ্রামের আপিয়ার রহমানের মেয়ে সারজিয়া খাতুনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ৫ জানুয়ারি রাতে বউকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল রুবেলের। এ জন্য দিনের বেলা গ্রামের বাজারের একটি সেলুনে চুল কাটার উদ্দেশ্যে বের হয় সে। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি।’

সর্বশেষ খবর