বিশ্বে বায়ুদূষণে আবারও শীর্ষস্থান দখল করেছে ঢাকা। গতকাল দুপুর ১২টায় ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা সবার ওপরে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাইবিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজুয়াল’-এর বায়ুমান সূচক (একিউআই) থেকে এ তথ্য জানা যায়।

একিউআই অনুযায়ী ঢাকায় গতকাল সকাল ১০টায় ২৬৯ রেকর্ড করা হয় বায়ুদূষণের মাত্রা। এর অর্থ হলো বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে। একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়িতে অবস্থানের এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কাজে গেলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা ছাড়া দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীনের উহান ও কাজাখস্তানের নুর সুলতান শহর, যাদের দূষণের মাত্রা যথাক্রমে ২৩১ ও ২২৯। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছয় ধরনের পদার্থ ও গ্যাসের কারণে ঢাকায় দূষণের মাত্রা সম্প্রতি অনেক বেড়ে গেছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধূলিকণা অর্থাৎ পিএম ২ দশমিক ৫-এর কারণেই ঢাকায় দূষণ অতিমাত্রায় বেড়ে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে ক্যাপসের পরিচালক ও স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘বায়ুদূষণের মাত্রা ২০০ ছাড়ালে আমরা বলি মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর। ৩০০ হলে দুর্যোগপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করি। শীত শুরু হলে শুষ্ক মৌসুমের কারণে এ ধরনের আবহাওয়া থাকে। আমরা আগেই বলেছিলাম একসময় জরুরি অবস্থাও জারি করা হতে পারে, যদি সরকার বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়।’ ক্যাপসের এক গবেষণায় সম্প্রতি বলা হয়, রাজধানীতে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে গড় বায়ুদূষণ বেড়েছে ৯ দশমিক ৮ ভাগ।

জরিপে বলা হচ্ছে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বায়ুমান সূচকের (একিউআই) গড় মাত্রা ছিল ২৩৫ দশমিক ১। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ২৬১ দশমিক ৬; যা দুই বছরের হিসাবে ১১ দশমিক ৩ ভাগ বেশি। একইভাবে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ২২০ দশমিক ৫। ২০২১ সালে বেড়ে হয়েছে ২৩১ দশমিক ৪।

তাদের গবেষণায় প্রতি মাসের গড় প্রতি ঘনমিটার অতিসূক্ষ্ম কণা (পিএম ২.৫) পরিমাপ করে দেখা যায়, তেজগাঁও, আগারগাঁও, মিরপুর-১০, গুলশান-২, শাহবাগ, ধানমন্ডি-৩২ ও আবদুল্লাহপুরে গড় মাসিক পিএম ২ দশমিক ৫-এর ঘনত্ব বেশি। সবচেয়ে বেশি দূষণ দেখা যায় তেজগাঁওয়ে। যেখানে ঘনত্ব বাংলাদেশের নির্ধারিত মান থেকে ৪ দশমিক ৬৪ গুণ বেশি এবং তুলনামূলক কম দূষিত সংসদ এলাকা যেখানে দূষণের মান ৩ দশমিক ৫৯ গুণ বেশি।