শনিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সিটি করপোরেশন চাইলে রাতারাতি দূষণ কমবে

-স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন

সিটি করপোরেশন চাইলে রাতারাতি দূষণ কমবে

নগর পরিকল্পনাবিদ ও বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেছেন, দুই সিটি করপোরেশন চাইলেই ঢাকার বায়ুদূষণ রাতারাতি ২৫ থেকে ৩০ ভাগ কমিয়ে ফেলতে পারে। শুধু রাত ২টার পর ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি, জলকামান ও সিটি করপোরেশনের অন্যান্য গাড়ি দিয়ে বৃষ্টির  মতো পানি ছিটাতে হবে। রাস্তার পাশের ও সড়ক বিভাজকের গাছগুলোর পাতা ধুয়ে দিতে হবে। ধুলাপ্রবণ এলাকায় পানি ছিটাতে হবে। করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় এ কাজগুলো হওয়ায় দূষণ অনেক কমে গিয়েছিল। পরে বন্ধ হয়ে যায়।তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শীতকাল এলেই বায়ুদূষণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা। এর বড় প্রমাণ ইনহেলারের বিক্রি কয়েক হাজার গুণ বৃদ্ধি পায়। এটাই প্রমাণ করে যে ঢাকা শহরের মানুষ দূষণে প্রচ-ভাবে আক্রান্ত। আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় এ সময় প্রচুর ধুলা ওড়ে। সেই সঙ্গে রয়েছে গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া। ধুলা ও ধোঁয়া মিলে গাছের সব পাতা তৈলাক্ত পদার্থে ঢেকে যায়। পাতার সবুজ অংশ ময়লায় ঢেকে যাওয়ায় গাছগুলো ঠিকভাবে সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে না। ফলে গাছ অক্সিজেন দিতেও পারে না, আবার আমরা যে বিষাক্ত কার্বন-ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করি সেগুলো টেনে নিতে পারে না। শীতকালে দূষণ বেশি হওয়ার এটা একটা কারণ। এ ছাড়া নির্মাণ এলাকায় পানি না ছিটানোয় প্রচুর ধুলা উড়ছে। এজন্য ১৫ বছর ধরে আমি শুষ্ক মৌসুমে পানি ছিটানোর অনুরোধ করছি। ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ও পুলিশের জলকামানগুলো এক প্রকার বসেই থাকে। মেয়ররাও কিছু গাড়ি কিনেছেন। এগুলো দিয়ে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করলে দূষণের মাত্রা অনেক কমে যেত। করোনা মহামারি প্রথম যখন প্রচ- বেগে শুরু হয়, তখন অনেক বলার পরে রাস্তায় ও গাছে পানি ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। দূষণও কমে গিয়েছিল। আশা করছি প্রস্তাবটি আবারও বিবেচনা করা হবে। স্থপতি মোবাশ্বের বলেন, রাস্তায় প্রচুর ফিটনেসবিহীন গাড়ি, প্রাইভেট কারের ব্যবহার বৃদ্ধি ও যানজটের কারণেও ঢাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে। আমাদের গাড়িগুলোও ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। ফিটনেস পরীক্ষা করা হয় না। আবার পরীক্ষা না করেই ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। দুঃখজনক হলো, সরকার যে গাড়িগুলো ব্যবহার করে সেগুলোই বেশি দূষণ ঘটায়। বিআরটিসির প্রায় সব গাড়িতেই কালো ধোঁয়া বের হয়। ফিটনেস থাকলে কালো ধোঁয়া বের হওয়ার কথা না। ঢাকা শহরে একটা সুশৃঙ্খল গণপরিবহনব্যবস্থা চালু করতে পারলে যানজট কমত। প্রাইভেট কারের ব্যবহার কমত। জ্বালানির ব্যবহারও কমত। মেয়র আনিসুল হক বাসরুট ফ্রাঞ্চাইজ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁর স্বপ্ন আমরা ‘ঢাকা চাকা’র মাধ্যমে দেখতে পাই। একটা সুশৃঙ্খল গণপরিবহনব্যবস্থা। এখন যা করা হচ্ছে তা এখনো আমি বুঝে উঠতে পারিনি।

সর্বশেষ খবর