শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

মেট্রোরেলে যুক্ত দিয়াবাড়ী-মতিঝিল

লাইন যাবে কমলাপুর পর্যন্ত, ব্যয় বাড়বে ৮ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেট্রোরেলে যুক্ত দিয়াবাড়ী-মতিঝিল

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল সর্বশেষ এ ভায়াডাক্টটি বসানো হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

স্বপ্নের মেট্রোরেল লাইন-৬-এর সর্বশেষ ভায়াডাক্টটি বসার মাধ্যমে পুরো কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। গতকাল তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৫৮২ ও ৫৮৩ নম্বর পিয়ারের মধ্যে সর্বশেষ অংশে ভায়াডাক্টটি বসানো হয়। এতে মেট্রোরেলের পুরো কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। এখন ভায়াডাক্টের ওপর বসানো হচ্ছে রেলট্র্যাক। এদিকে নকশা অনুযায়ী মেট্রোরেল লাইন-৬ মতিঝিলে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু সেবার পরিধি বাড়াতে এ লাইন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা। প্রস্তাবটি একনেকে পাঠানো হয়েছে। এতে এ প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে ৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রকল্পটির মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়া মেট্রোরেলের দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচলের জন্য মোট ২৪ সেট রেল কোচ আনা হচ্ছে। এর মধ্যে নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী ১২ সেট রেল কোচের মধ্যে ১০ সেট ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। বাকি ২ সেট কোচ জাপানের কুবে বন্দর থেকে মোংলার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। বাকি ১২ সেট কোচ জুনের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাবে। দুটি শান্টিং লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ইতোমধ্যে এসে যুক্ত হয়েছে দিয়াবাড়ী ডিপোয়। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের প্রথম অংশ দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে দিয়াবাড়ী-আগারগাঁও পর্যন্ত নয়টি স্টেশনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। এর মধ্যে উত্তরা আইকনিক স্টেশনের কাজেও বেশ অগ্রগতি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন দৃষ্টিনন্দন এ স্টেশনটির নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। এর বাইরে বাকি আটটি স্টেশনের কাজ প্রায় ৭৩ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সাতটি স্টেশনের মধ্যে চারটির কনকোর্স ছাদ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায় রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শহাবাগ। এখন এ চারটি প্ল্যাটফরম নির্মাণের কাজ চলছে। বাকি তিনটির কাজও দ্রুতগতিতে চলছে। তবে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে বাংলাদেশেও বাড়ছে মৃত্যু ও সংক্রমণ। ইতোমধ্যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ফলে নেতিবাচক প্রভাব মেট্রোরেলের কাজের ওপরও পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে দিনরাত কাজ করছেন শ্রমিক, প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা। সূত্র জানান, ভায়াডাক্ট বসানো ছাড়াও রাজধানীবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেলের অন্যান্য অংশের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। বিশেষ করে ইলেকট্রিক লাইন টানা, দুই পাশের প্যারাপেড ওয়াল নির্মাণ, স্টেশনগুলোর নির্মাণকাজ চলছে বিরামহীন। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের একাংশ দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে দিনরাত কাজ চলছে। চলছে মেট্রোরেলের ট্রায়াল রানও। এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএলের এমডি এম এ এন সিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুরো কাঠামো দৃশ্যমান করা আমাদের একটি বড় অর্জন। আমরা আমাদের নির্ধারিত সময়েই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাই। সে লক্ষেই কাজ করছি।’ তিনি আরও জানান, মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত আরও ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বাড়ানো হবে। এতে পুরো প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। ডিএমটিসিএলের সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পূর্তকাজের অগ্রগতি ৯০ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ দশমিক ০৮ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর