শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

জাতির পিতাকে হত্যার পর প্রতিবাদ করেছেন কবিরা : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

জাতির পিতাকে হত্যার পর প্রতিবাদ করেছেন কবিরা : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কবিতা, গান, নাটক তথা সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে যেভাবে প্রতিবাদের ভাষা বেরিয়ে আসে এবং মানুষ উদ্বুদ্ধ হয় তা আর কোনো কিছুতে হয় না। তিনি বলেন, জাতির পিতা হত্যাকান্ডের পরও যখন রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল তখনো প্রতিবাদ করেছেন কবি ও আবৃত্তিকাররা।

গতকাল সকালে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসব-২০২০-২০২২’-এর উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক-২০২০-২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত আবৃত্তি উৎসবে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের পাঁচ দিনব্যাপী এই আবৃত্তি উৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথিদ্বয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক-২০২০-২২ প্রদান করেন। বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর যখন কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ড করা যাচ্ছিল না তখন আমাদের কবিতার মধ্য দিয়েই প্রতিবাদের ভাষা বেরিয়ে আসে এবং মানুষ সেখানে উদ্বুদ্ধ হয়। তিনি বলেন, আমাদের ওপর কতবার আঘাত এসেছে কিন্তু বাঙালি বসে থাকেনি। প্রতিবারই প্রতিবাদ করেছে। কারণ আমাদের সাহিত্যচর্চা তো বৃথাই হয়ে যেত। এক একজন কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, আবৃত্তিকার আমাদেরকে যা কিছু দিয়ে গেছেন এগুলো আমাদের সম্পদ। তিনি বলেন, নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীল দর্পণ’ নাটকের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন যেভাবে এগিয়ে গিয়েছিল-একটি কবিতার শক্তি যে কত বেশি সেটা তো আমরা নিজেরাই জানি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমি বলব যে এ দেশের আন্দোলনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে এ দেশের কবিদের এবং আবৃত্তিকারকদের। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের সবার প্রতি। তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, সে সময় অনেকেই যে যেভাবে পেরেছেন, লিখেছেন, নাটক করেছেন, সাহিত্য রচনা করেছেন, বই ছাপিয়েছেন, প্রতিবাদ করে গ্রেফতারও হতে হয়েছে কাউকে কাউকে। কিন্তু থেমে থাকেননি কেউ। কবিতার অমোঘ শক্তির কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যখন আন্দোলন শুরু করলাম স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, তখনো কত নাটক, কবিতা-বিভিন্ন আবৃত্তির মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। সেখানে অনেক বাধা-বিপত্তিও এসেছে। তখনকার কবিতার উৎসব অনেক বাধার মধ্য দিয়েই করতে হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব কবিতা পাঠের আয়োজন বা উৎসবে যাওয়া তাঁর অভ্যাস ছিল। কখনো দূরে বসে বা গাড়িতে বসেও তিনি শুনেছেন। তিনি বলেন, এই কবিতার মধ্য দিয়ে আমাদের অনেক না বলা কথা বলা হয়। অনেক সংগ্রামের পথও দেখানো হয়। শেখ হাসিনা একজন রাজনীতিবিদ এবং এ জন্য বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা প্রদান করলেও সংস্কৃতিচর্চার আবেদন বক্তৃতার চেয়ে অনেক বেশি বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমি কথা বলে একটি মানুষকে যতটুকু উদ্বুদ্ধ করতে পারি, তার চেয়ে অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ হয় মানুষ একটা কবিতা, গান, নাটক বা সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে। যার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ের কাছে পৌঁছানো যায়। গ্রাম-বাংলার চিরায়ত ‘কবি গান’র আসরের প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমাদের দেশে আগে কবিয়ালদের লড়াই হতো। আসলে বাঙালিরা সহজাতভাবেই কবি, এটা হলো বাস্তবতা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর