সোমবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

কনস্টেবল সিদ্ধার্থ হত্যার বিচার শেষ হয়নি আট বছরেও

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

প্রথমে তদন্ত কর্মকর্তার ভুলে, পরে আদালতের পেশকারের ভুলে বিচারে বিলম্ব হচ্ছে পুলিশ সদস্য সিদ্ধার্থ হত্যা মামলার। তদন্ত কর্মকর্তা প্রথমে যে অভিযোগপত্র দাখিল করেন, সেখানে প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে শিশুদের যুক্ত করে দেন। পরে আদালত আলাদাভাবে অভিযোগপত্র দাখিলে পুলিশকে নির্দেশ দেয়। দ্বিতীয় দফায় দেওয়া সেই অভিযোগপত্রটির বিচার কাজ আবার শুরু হয় শিশু আদালতে। যেখানে আবার প্রাপ্তবয়স্কদের বিচার চলছিল শিশু আইনে।

এমন নানা অসঙ্গতির কারণে বিএনপি-জামায়াতের              বোমা হামলায় নিহত পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ রায় সরকার হত্যার বিচার কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল  ইসলাম। তবে এসব অসংগতি কাটিয়ে এখন মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত। আগামী ৩ মার্চ চার্জ গঠনের শুনানির দিন ধার্য আছে বলে তিনি জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম জানান, ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর হোসেন খন্দকার বিএনপি-জামায়াতের ৮৯ নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। একটি হত্যা ও অন্যটি বিস্ফোরক আইনের মামলা। তবে ৮৯ জনের মধ্যে চারজন শিশু ছিল। আদালতের নজরে আসার পর শিশুদের আলাদা করে আবারও অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দেন বিচারক। ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের আলাদা করে দুই মামলায় চারটি অভিযোগপত্র জমা দেন। পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামানের অভিযোগপত্রটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে (যেখানে শিশুদের বিচার কাজ চলে) পাঠানো হয়। আদালতের পেশকার প্রাপ্তবয়স্কদের দুটি মামলায় ‘শিশু ট্যাগ’ লাগিয়ে দেওয়ায় মামলাটি ওই আদালতে চলে যায়। ওই আদালতে শিশুদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের সময় আইনজীবীরা দেখতে পান, প্রাপ্তবয়স্করাও শিশু আইনের বিচারের আওতায় চলে এসেছেন। এরপর বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনুসহ ৮৫ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। বর্তমানে মামলাটি এই আদালতে আছে। যার চার্জ গঠনের শুনানি আগামী ৩ মার্চ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে নগরীর ভুবনমোহন পার্কে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তৎকালীন ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কয়েকটি এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে সোনাদীঘি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। টহল পুলিশের দুটি ট্রাক হেতেম খাঁ মোড় হয়ে লোকনাথ স্কুলের সামনে দিয়ে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির দিকে যাচ্ছিল। এ সময় ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা পুলিশের একটি ট্রাক লক্ষ্য করে হাতবোমা ছুড়ে মারে। এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ রায় সরকারসহ ট্রাকে দায়িত্বরত ৯ পুলিশ সদস্য আহত হন। গুরুতর আহত সিদ্ধার্থকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বিএনপি ও জামায়াতের ৮৯ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর