রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

মাসের পর মাস শেষ হয় না তদন্ত

চট্টগ্রামে আলোচিত মামলা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

আলোর মুখ দেখছে না চট্টগ্রামের আলোচিত বেশ কয়েকটি মামলার তদন্ত। মাস শেষে বছর যায়, পরিবর্তন হয় তদন্ত কর্মকর্তার। পরিবর্তন হয় তদন্তকারী সংস্থাও। কিন্তু ভাগ্য পরিবর্তন হয় না মামলার। কোনো কোনো মামলা ছয়-সাত বছর হয়ে গেলেও ক্লু পর্যন্ত উদঘাটন করা যায়নি। অপরাধ বিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মামলার তদন্ত শেষ না হলে অপরাধীরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে অন্যরাও অপরাধে উৎসাহ পায়।’ জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি নগরীর পাঁচলাইশের তেলিপট্টি বাসার মুখে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের শিক্ষক অঞ্জলি রানী দেবী। সাত বছর পার হলেও কোনো আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উদঘাটন করা যায়নি ক্লু। ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর নগরীর আসকার দীঘির বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রিপেন সিংহ। ওই দিন রাতে পতেঙ্গা বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। চার বছর পার হয়ে গেলেও থমকে আছে মামলার তদন্ত। ২০২০ সালের ১৩ জুলাই চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বাহারাইন প্রবাসী আজাদুল ইসলাম আজাদ ও তার ছোট ভাই আমানুল ইসলাম ফারুককে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজারের টেকনাফ থানা পুলিশ। পুলিশের চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় ১৬ জুলাই ক্রসফায়ারের নামে তাদের হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ছয়জনকে আসামি করে চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন দুই নিহতের বোন রিনাত সুলতানা শাহীন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য কক্সবাজার পুলিশকে নির্দেশনা দেয়। বছর পেরিয়ে গেলেও আজও আসেনি সেই তদন্ত রিপোর্ট। ২০২০ সালে ২৯ জুলাই চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও প্রবাসী মো. জাফরকে। পুলিশের চাহিদা মতো টাকা না দেওয়ায় কক্সবাজারের চকোরিয়ায় নিয়ে গিয়ে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করা হয় জাফরকে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কক্সবাজারের চকোরিয়ার হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম, চকোরিয়া থানার ইনচার্জ হাবিবুর রহমানকে আসামি করে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধ আহমদ নবী। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে চট্টগ্রাম সিআইডি। আজাদ ও ফারুক হত্যা মামলার বাদী রিনাত সুলতানা শাহীন বলেন, ‘এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের নামে বেশ কয়েক বার আমাদের ডাকা হয় কক্সবাজারে। কয়েক মাসের মধ্যে উখিয়া সার্কেলে তিন বার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এ মামলার আসামিরা পুলিশ হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।’

সর্বশেষ খবর