রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নারী সাংবাদিকের ভুয়া ভিডিও ফেসবুকে গ্রেফতার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি চ্যানেল একাত্তর টিভির নারী সাংবাদিকের অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় একটি চক্র। পোস্টটি ওই সাংবাদিকের নজরে এলে গুলশান থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন তিনি। পুলিশ বলছে, ওই সাংবাদিকের চেহারার কিছু অংশ ফটোশপে এডিট করে ছড়ানো হয়েছে। মামলার পর গুলশান থানা একটি ফেসবুক আইডি ও একটি ব্লগ থেকে ওই অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ পায়। এরপর সেই আইডি ও ব্লগের মালিককে শনাক্ত করে চট্টগ্রামের হালিশহর এবং নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- চট্টগ্রামের হালিশহরের বাসিন্দা নুর হোসাইন নুরু ও রাজধানীর সবুজবাগের বাসিন্দা সজীব মিয়া।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাদের সিনিয়র নেতাদের নির্দেশে তারা ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ভাইরাল করার চেষ্টা করছিলেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, একাত্তর টিভির নারী সংবাদকর্মী নাজনীন মুন্নী গত ৩ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় অভিযোগ করেন যে- একটি মৌলবাদী সম্প্রদায় ও কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তার কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে তার চেহারার কিছু অংশ ফটোশপের মাধ্যমে এডিট করে নগ্ন ও অশীল ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। ‘নুর হোসাইন নুরু’ নামে একটি ফেসবুক আইডিসহ আরও একাধিক ফেসবুক আইডি ও ব্লগ থেকে তার এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর গুলশান থানা এ বিষয়ে কাজ শুরু করে। প্রথমে নুর হোসাইন নুরু নামে আইডিটির মালিককে শনাক্ত করা হয়। নুর চট্টগ্রামের হালিশহরের বাসিন্দা। সে হালিশহর থানার যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী। তার পরিচয় শনাক্তের পর তাকে হালিশহর থেকে স্মার্টফোনসহ গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, এ ছাড়া আমরা ‘জনগণের মুখোমুখি’ নামে একটি ব্লগকে শনাক্ত করতে পারি। ব্লগটি থেকেও ওই সাংবাদিকের ছবি এডিট করে বানানো অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ব্লগটির মালিক সজীব মিয়া। সে রাজধানীর সবুজবাগ থানা ছাত্র অধিকার পরিষদের সক্রিয় একজন কর্মী। তাকে আমরা নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুর আমাদের কাছে স্বীকার করেছে- তার ফেসবুক থেকে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে। তার সিনিয়র আরেক যুবদল নেতা তাকে ভিডিওটি পোস্ট করতে বলেছিল। সিনিয়র নেতার আদেশে সে ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরালের চেষ্টা করে। এ ছাড়া একই সিনিয়র নেতার আদেশে সে ফেসবুকে সরকারবিরোধী অনেক মিথ্যা পোস্টও দেয়। অন্যদিকে সজীব মিয়া জানায়- সে ছাত্র অধিকার পরিষদের সবুজবাগ থানা কমিটির একজন সক্রিয় কর্মী। সে ছাত্র অধিকার পরিষদের সবুজবাগ থানার সহসভাপতি তারিকুল ইসলাম তন্ময়ের কাছ থেকে এ ভিডিও পেয়েছে। তার নির্দেশেই সে ভিডিওটি তার ব্লগে পোস্ট করে। ডিসি আসাদুজ্জামান বলেন, নুর ও সজীবকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য আমরা জানতে পারব।

 

সর্বশেষ খবর