রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রকাশনা বেশি, বিক্রি কম কাব্যগ্রন্থে

মোস্তফা মতিহার

প্রকাশনা বেশি, বিক্রি কম কাব্যগ্রন্থে

প্রকাশের সংখ্যায় বরাবরের মতো এবারের মেলায়ও এগিয়ে আছে কবিতার বই। গতকাল ১২তম দিনে কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে ৩৫টি। মেলা শুরুর পর থেকে গত ১২ দিনে মোট কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ ৩২৩টি। 

এবারের মেলায় প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে- আদর্শ প্রকাশিত- কাজী নজরুল ইসলামের নির্বাচিত কবিতাগ্রন্থ, অক্ষর প্রকাশিত শামসুর রাহমানের নির্বাচিত ৩০০ কবিতার বই, কথাপ্রকাশ এনেছে নির্মলেন্দু গুণের ‘একুশে ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের কবিতা’, সৃজনী প্রকাশ করেছে মুহম্মদ নূরুল হুদার ‘ক্ষমা করো এই প্রেমদাসে’, সাহিত্যদেশ প্রকাশ এনেছে   স.ম. শামসুল আলমের ‘যার কাছে জলবিম্ব প্রেম নেই সে আমার তামাম দুনিয়া’ ও ‘বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যা নাকি, সন্ধ্যামুখর বৃষ্টি’, চয়ন প্রকাশ থেকে এসেছে নাদিরা বেগমের ‘স্বপ্নছোঁয়া’, আগামী এনেছে ড. ওয়াহিদুজ্জামানের ‘মনের মন্দিরে বঙ্গবন্ধু’ এবং মানুষ প্রকাশনী এনেছে সাহিদা সুলতানা রীমা সম্পাদিত কবিতা সংকলন ‘এক মলাটের কাব্য-১’, অনন্যা এনেছে মুহম্মদ নূরুল হুদার কবিতা সমগ্র (৩), ও অমিত দের ‘মানুষ কেমন হয়’, অমর প্রকাশনী এনেছে ডা. রনজিত বিশ্বাসের ‘অন্তহীন ভালোবাসা’, রূপম প্রকাশনী এনেছে মানিক মজুমদার ও শাওন সাগর সম্পাদিত কবিতার সংকলন ‘সুবর্ণজয়ন্তীর চন্দ্রালোক’, আগামী  এনেছে সাখাওয়াত টিপুর ‘স্নায়ুযুদ্ধ’।  প্রকাশনার দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও বরাবরের মতোই বিক্রিতে পিছিয়ে রয়েছে কাব্যগ্রন্থ। এ নিয়ে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের মধ্যেও রয়েছে নানা ধরনের মতানৈক্য। কেউ কেউ বলছেন মানসম্পন্ন কবিতার বই প্রকাশ হয় না বলে কাব্যগ্রন্থ বিক্রির দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। একুশের বইমেলায় টাকার বিনিময়ে প্রকাশকরা যেনতেন মানের কবিতার বই প্রকাশ করে থাকেন বলেই কবিতার এই দুরবস্থা। তবে ভিন্ন কথাও বলছেন কেউ কেউ। মানসম্পন্ন কবিতার বই প্রকাশ হলেও কবিতার পাঠক সেভাবে তৈরি হয়নি আর কবিতা একটু দুর্বোধ্য বলেই বিক্রির দিক থেকে কবিতার বই পিছিয়ে রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে একজন বীর বিক্রম : খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মতিয়র রহমান বীরবিক্রম লিখেছেন ‘মুক্তিযুদ্ধে একজন বীর বিক্রম’। বইটির সম্পাদনা করেছেন রুচিরা সুলতানা। প্রকাশ করেছে ‘শব্দশিল্প’। এটি পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীতে বাংলা একাডেমির বইমেলায় শব্দশিল্পের ৩৪২ ও ৩৪৩ নম্বর স্টলে। ফলের সাহিত্যরস : ৪৯টি ফল নিয়ে কৃষিবিশেষজ্ঞ ড. এস এম আতিকুল্লাহর ব্যতিক্রমধর্মী বই ‘ফলের সাহিত্যরস’। এটি প্রকাশ করেছে মাওলা ব্রাদার্স। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রব এশ। বইটি পাওয়া যাচ্ছে মেলায় মাওলা ব্রাদার্সের প্যাভিলিয়ন নম্বর ৩-এ। নতুন বই : গতকাল মেলার ১২তম দিনে নতুন বই প্রকাশ হয়েছে ১১৯টি। আর গত ১২ দিনে মোট বই প্রকাশ হয়েছে ১ হাজার ২৮৮টি। গতকাল প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে গল্পের বই ১০টি, উপন্যাস ১৫টি, প্রবন্ধ ৭টি, কবিতা ৩৫টি, গবেষণা ২টি, ছড়া ২টি, শিশুসাহিত্য ৭টি, জীবনী ৩টি, মুক্তিযুদ্ধ ৩টি, ভ্রমণ ৬টি, ইতিহাস ১টি, বঙ্গবন্ধু ৪টি, ধর্মীয় ২টি, অভিধান ১টি, সায়েন্স ফিকশন ২টি এবং অন্যান্য ১৫টি। এ দিনের উল্লেখযোগ্য বইগুলো হচ্ছে-  শব্দশৈলী প্রকাশিত রশীদ হায়দারের ভাষা আন্দোলন বিষয়ক ‘একুশের গান’, আহমেদ রেজার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ‘একাত্তরের স্মৃতিচারণ’, বাংলা একাডেমি থেকে নূহ-উল-আলম লেনিনের গবেষণা ‘রাজনীতিতে হাতেখড়ি ও কলকাতায় শেখ মুজিব’, শামসুজ্জামান খানের সম্পদনায় প্রবন্ধ ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ : বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ’, পাঠক সমাবেশ থেকে এসেছে স্বকৃত নোমানের প্রবন্ধ ‘উপন্যাসের পথে’, সময় প্রকাশন থেকে এসেছে শওকত ওসমানের কাব্যগ্রন্থ ‘কাব্যসমগ্র’, প্রত্যয় প্রকাশন থেকে এসেছে সেলিনা হোসেনের শিশুতোষ গল্প ‘শহীদ দিবসের শহীদ মিনার’, চিরদিন প্রকাশনী থেকে এসেছে নির্মলেন্দু গুণের ভ্রমণ কাহিনি ‘ভ্রমি দেশে দেশে- টোকিও সিডনি দিল্লি’।

 অসীম সাহার কাব্যগ্রন্থ ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, সময় প্রকাশন থেকে এসেছে শওকত ওসমানের কাব্যগ্রন্থ ‘কাব্যসমগ্র’ প্রভৃতি। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান : বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। আলোচনায় অংশ নেন খালেদ হোসাইন, আহমাদ মোস্তফা কামাল এবং ফারহান ইশরাক। সভাপতিত্ব করেন মফিদুল হক। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মিনার মনসুর, স্নিগ্ধা বাউল এবং রহমান শেলী। আবৃত্তি করেন অঞ্চল চৌধুরী, মুজাহিদুল ইসলাম এবং মাসুদুজ্জামান। সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল ‘কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর’, ‘উচ্চারক’ এবং ‘নৃত্যাঙ্গন’-এর শিল্পীদের পরিবেশনা।

সর্বশেষ খবর