মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

রূপপুর প্রকল্পে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ওপর পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিত দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নে সরকার সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত রুশ পারমাণবিক সংস্থা (রোসাটম) কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেবে। এরই মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালনকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রোসাটম কর্তৃপক্ষের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। আজ এ বিষয়ে আরও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এখন সরকার ও দায়িত্বশীলরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। এ অবস্থায় রূপপুর প্রকল্পে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না তা জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ যুদ্ধে প্রকল্পের কাজে হয়তো সাময়িক প্রভাব পড়তে পারে, তবে তা দীর্ঘায়িত হবে না। এতে প্রকল্পটির কাজের গতিও বাধাগ্রস্ত হবে না। তবে প্রকল্পের অর্থায়নে সামান্য কিছু বিলম্ব হতে পারে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সচেতন এবং বেশ সতর্ক অবস্থায় আছি। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে রাশিয়ান ফেডারেশনের ঋণচুক্তির আওতায়। দেশে কাজ শেষ হলে এখানকার প্রকৌশলীরা সনদ দিচ্ছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার যে ঋণের পরিমাণ তা ডেভিট বা ডিরেকশন হচ্ছে। মূল বিনিয়োগ রাশিয়া সরকারেরই। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখা। আমরা এক প্রকারে এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী। এ জন্য এ বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আমাদের এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। ১ মার্চ আবারও আলোচনায় বসব। দেশে যে সংস্থাগুলো প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের বোঝাপড়া দৃঢ় করতে চাইছি, যাতে পরে কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে আমরা একই অবস্থানে থাকতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘তবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে কি না এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশে এর প্রভাব পড়লে আমাদের এখানেও কিছুটা পড়বে। এখন পর্যন্ত রোসাটমকে বিধিনিষেধের আওতায় আনা হয়নি এবং রোসাটম কর্তৃপক্ষ আমাদের এ বিষয়ে কিছু বলেনি। তবে রূপপুরে কর্মরত রুশ কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে সেখানকার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের এই সময়ে সতর্ক থাকার কথাও বলেছি।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি মনে করি না রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কোনো প্রভাব এ মুহূর্তে সরাসরি বাংলাদেশের ওপর পড়বে। তবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিধিনিষেধের কারণে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। ফান্ড ট্রান্সফারে সমস্যা হতে পারে। আবার যুদ্ধের জন্য রাশিয়া সরকারের ফান্ডিং সমস্যা থাকতে পারে। যুদ্ধ যদি আগামী দু-চার মাসও চলে তবে কোনো প্রভাব হয়তো পড়বে না। তবে এর পরও যুদ্ধ চললে রূপপুর প্রকল্পে সমস্যা হতে পারে।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর