শনিবার, ৫ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

নামিদামি ব্র্যান্ডের বোতলে ভেজাল মদ, গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর রামপুরার রিয়াজবাগের একটি বাসায় ভেজাল মদের কারখানার সন্ধান পেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। বিভিন্ন ভাঙাড়ি দোকান থেকে মদের বোতল সংগ্রহ করে ওই কারখানায় নতুন লেবেল লাগানো হতো। বাজার থেকে সংগ্রহ করা ইথানল, এসেন্স, চারকল পাউডার দিয়ে তৈরি করা হতো দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের মদ। পরে সেগুলো খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করা হতো। ছয় মাস ধরে ভেজাল মদ তৈরি ও বিক্রি করে আসছিল চক্রটি। বৃহস্পতিবার রাতে ওই কারখানা থেকে চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল এসব তথ্য জানান ডিএনসির ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কারখানার মালিক কাজী আশরাফুজ্জামান ওরফে মোশারফ, দুই সহযোগী আবুল খায়ের চৌধুরী ও হায়দার ভূঁইয়া। তাদের থেকে ১০ বোতল বিদেশি ব্ল্যাক লেবেল, ৫ বোতল নেমিরোফ, ৮ বোতল কেরুস ফাইন ব্র্যান্ডি, মদ তৈরির উপকরণ ইথানল ২০ লিটার, এসেন্স ৪০০ গ্রাম, চারকল পাউডার ৪৫০ গ্রাম, বোতলিং করার পাইপ একটি, বিদেশি মদের লেবেল ৮০টি, মদের কর্ক ৮০টি, খালি বোতল ৩০টি ও একটি স্টিলের চোঙা জব্দ করা হয়েছে। এর আগে ৩ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘ভেজাল মদে সয়লাব নগর’ শিরোনামে লিড নিউজ ছাপা হয়। সেখানে ভেজাল মদের বিভিন্ন কারখানা গড়ে ওঠার তথ্য এবং এসব ভেজাল মদ খেয়ে মৃত্যুর বিষয় তুলে ধরা হয়। এটি আমলে নিয়ে তৎপরতা শুরু করে ডিএনসি।

গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, এর আগে ভেজাল মদ পান করে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। ফলে ডিএনসি মহাপরিচালক ভেজাল মদ প্রতিরোধের নির্দেশনা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রামপুরায় ভেজাল মদের কারখানায় অভিযান চালিয়ে তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরা ভাঙাড়ি দোকান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতল সংগ্রহ করে নতুন লেবেল লাগাতেন। পাশাপাশি বাজার থেকে ইথানল, এসেন্স, চারকল পাউডারসহ বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করে নানা ব্র্যান্ডের মদ তৈরি করতেন। সেগুলো খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করতেন। তিনি বলেন, চক্রটি ছয় মাস ধরে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। কোনো ওয়্যারহাউসের কাছে মদ বিক্রি করত না। খুচরাভাবে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে মদ বিক্রি করত। মদের দাম একেক সময় একেক রকম। ভেজাল মদের তো দামের কোনো সীমা নেই। ভেজাল মদ তৈরির খরচই তো অনেক কম। তারা এমনভাবে বোতলজাত করে যে মানুষ আসল-নকল বুঝতে পারে না। ক্রেতারা আসল মদ মনে করেই কেনে। তাদের কেমিক্যাল, লেবেল সরবরাহসহ অন্যান্য কাজে আর কাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ভেজাল মদ এড়িয়ে চলতে অবৈধ উৎস থেকে না কেনার পরামর্শ দেন ডিএনসির এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর