বুধবার, ৯ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা
কর্ণফুলীর গহিনে আলোর ঝিলিক

সংযোগ সড়কে ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের বিটুমিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর্ণফুলী নদীর গহিনে পড়েছে আলোর ঝিলিক। নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ঘিরে বেড়েছে উচ্ছ্বাস। দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে সরকারের এই মেগা প্রকল্প। শুধু নদীর তলদেশে নয়, দুই পারেও লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। ধানি জমির বুক চিরে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। টানেল ঘিরে নির্মিত সড়কে বিটুমিনের প্রলেপ। তাতে রোদের ঝিকিমিকি খেলা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই টানেল হবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চ্যানেল। বাড়বে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার। খুলে যাবে পর্যটনশিল্পের নতুন দুয়ার। প্রকল্প এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জলোচ্ছ্বাসের পানি যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য টানেলের দুই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে লোহার গেট। ভিতরে লাগানো হয়েছে সমান্তরাল বাতি। টিউবের ভিতর গাড়ি চলাচলের জন্য তৈরি করা হচ্ছে পিচঢালা সড়ক। দেওয়া হচ্ছে সিমেন্টের প্রলেপ। সংযোগ সড়কে এরই মধ্যে চারটি প্রলেপ দেওয়া শেষ। নিচের দুই লেয়ারে ব্যবহার হয়েছে ৬০-৭০ গ্রেড এবং ওপরের দুই লেয়ারে মডিফায়েড বিটুমিন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মেগা প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে বসুন্ধরা বিটুমিন। টানেলের ঠিক পাশের সড়কেই বিটুমিনের মিক্স প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার। তবে দুটি টিউবের প্রতিটি দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার ও ব্যস ১০. ৪০ মিটার। ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের এই টানেল, যেটি নির্মাণ হলে চীনের সাংহাই শহরের মতো চট্টগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হবে আনোয়ারা। আর দুইয়ে মিলে পরিণত হবে ওয়ান সিটি টু টাউনে। প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের ৮১ দশমিক ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আনোয়ারা প্রান্তে ৭২৭ মিটার ভায়াডাক্টের ডেক স্লব ও পেভমেন্ট নির্মাণকাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়ে গেছে। টাগবোটের নির্মাণকাজও শেষ। টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে মোট ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে এই সড়কে বিটুমিনের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, প্রায় এক বছর ধরে সড়ক তৈরির কাজ চলছে। এই প্রকল্পের ইতিবাচক দিক হলো, এর মেয়াদ ও ব্যয় কোনোটাই বাড়ানোর দরকার হয়নি। এমনকি নির্ধারিত সময়ের আগেই টানেলটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। কাজের গতি বাড়াতে বৃদ্ধি করা হয়েছে জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। করোনা মহামারীর মধ্যেও সমান তালে চলেছে টানেলের কর্মযজ্ঞ। প্রত্যাশিতভাবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে এবং প্রকল্পকাজ সম্পন্নের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর