সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা
কৃষি

বঙ্গবন্ধু ধান জনপ্রিয় করতে শস্য মানচিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

বঙ্গবন্ধু ধান জনপ্রিয় করতে শস্য মানচিত্র

নতুন জাতের ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’ এর চারায় দেশের মানচিত্র তৈরি করে সাড়া ফেলেছে খুলনার রূপসার জাবুসা গ্রামের চাষিরা। ১২ হেক্টর জমিতে যতে বেড়ে ওঠা দুই রঙের ধানের চারায় ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের প্রতিকৃতি। শস্যক্ষেত্রে বিশাল চিত্রকর্ম দেখতে ভিড় করছে চাষিরা। খুলনার রূপসা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্যোগে এ শস্য মানচিত্র করা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন জাতের ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’ এর প্রতি চাষিদের আকৃষ্ট করতে বেগুনি ও সবুজ (যা সোনালি বর্ণ ধারণ করবে) দুই রঙের চারা রোপণ করে প্রদর্শনী ব্লক করা হয়েছে। রূপসা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুজ্জামান বলেন, উচ্চ জিংক, পুষ্টিসমৃদ্ধ এ জাতের ধান সোনালি রঙের নাজিরশাইল বা জিরা ধানের দানার মতো। চালের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো এবং ভাত ঝরঝরে। হাইব্রিড ধানের উৎপাদন খরচ বেশি হলেও ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’ উপসী জাতের হওয়ায় ধানের উৎপাদন খরচ কম। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) নতুন জাতের উদ্ভাবন করেছে। জানা যায়, ব্রি ২৮ ও ২৯ ধান উৎপাদনে ১৫৫-১৬০ দিন সময় লাগে। সেখানে ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’ কৃষক ঘরে নিতে পারবে ১৪৫-১৪৮ দিনের মধ্যে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ৭-৮ মেট্রিক টন। রূপসা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিমাদ্রী বিশ্বাস জানান, প্রথমবারের মতো ১২ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলক এ জাতের আবাদ শুরু হয়েছে। মাঠপর্যায়ে ধানের বৃদ্ধি ভালো। পূর্ণ বয়স্ক ধান গাছের উচ্চতা ১০১ সেন্টিমিটার। উপযুক্ত পরিচর্যা ও অনুকূল পরিবেশে প্রতি হেক্টরে ৮.৮ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। তিনি বলেন, রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। কম ক্ষতি ও উচ্চফলনশীল হওয়ায় চাষিরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। অনেকেই নতুন এ জাতের ধানের বীজ চাচ্ছে। এ ধান খাদ্যের চাহিদা নয়, পুষ্টির অভাব পূরণেও ভূমিকা রাখবে। জাবুসা গ্রামের চাষিরা জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি জমি প্রস্তুত করে তারা নতুন জাতের বীজ বপন করেছেন। কম সময়ে ভালো পাতো (চারা) পাওয়ার পর তা জমিতে রোপণ করেছেন। ধানের চারা বেশ বেড়ে উঠেছে। এরই মধ্যে পুরো খেত সবুজ ধানে ভরে গেছে। আগামী মে মাসের মাঝামাঝি ধান কাটতে পারবেন তারা। চাষিরা বলেন, সবুজ ধানের মধ্যে আলাদা বেগুনি ধান রোপণ করে বাংলাদেশের বিশাল মানচিত্র দেখানো হয়েছে। যার ভিতরে লেখা আছে- ‘মুজিব শতবর্ষ বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’। আশপাশে সব চাষি আগ্রহ নিয়ে ধানের খেত দেখতে আসছে। নতুন এই জাতের ধানে উৎপাদন বেশি হওয়ায় চাষিরা নতুনভাবে উজ্জীবিত হবে।

সর্বশেষ খবর