বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

আটকে গেছে আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ রেললাইন

কসবা ও সালদা নদীর ব্রিজ নিয়ে আপত্তি বিএসএফের, কাজ শুরু করতে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ফোন রেলমন্ত্রীর

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

আটকে গেছে আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ রেললাইন

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের আপত্তির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইনের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পয়েন্টের কাজ। আলোচিত প্রকল্পটির সালদা নদীসংলগ্ন ব্রিজ ও কসবা স্টেশন এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের কাজ নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছে বিএসএফ। ফলে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। জটিলতা নিরসনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। রেল মন্ত্রণালয় আশা করছে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিগগিরই এ জটিলতা কেটে যাবে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আলোচিত প্রকল্পটির জটিলতা নিরসনে আমাদের কূটনৈতিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘যে দুটি পয়েন্টে বিএসএফ আপত্তি জানাচ্ছে তা নতুন কোনো লাইন নয়। বিদ্যমান লাইনের সংস্কার করে ডুয়েল-গেজ ডাবল লাইন করা হচ্ছে। ফলে এটি নিয়ে আপত্তির কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া বিদ্যমান রেললাইনটি জিরো পয়েন্ট থেকে নিরাপদ দূরত্বে রয়েছে।’

সূত্র জানান, ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি ২০১৪ সালে শুরুর পর ২০২০ সালে বাস্তবায়নের কথা ছিল। পরে ব্যয় বৃদ্ধি না করে প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। প্রকল্পের বেশির ভাগ অর্থ দিচ্ছে দাতা সংস্থা এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ইআইবি, যার পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে বরাদ্দ রয়েছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি প্রায় ৮০ শতাংশ। এখন বাকি ২০ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে। সূত্র জানান, জটিলতা নিরসনে ২ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটির স্টিয়ারিং কমিটির সভা হয়। ওই সভায় প্রকল্প পরিচালক শহীদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, বিএসএফ কর্তৃক আপত্তির কারণে সালদা নদী ও কসবা স্টেশন এলাকার কাজ বন্ধ রয়েছে। সালদা নদীর স্টেশনের কাছে নির্মাণাধীন ডাউন ২৬১ নম্বর সেতুর (বিদ্যমান এনলাইনমেন্ট বরাবর) কাজ গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে কয়েক দফায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিজিবির সঙ্গে বিএসএফের বৈঠক শেষে চলতি বছরের শুরুতে ওই ব্রিজের কাজ শুরু হলেও ১৩ জানুয়ারি আবার আপত্তি জানায় বিএসএফ। সেই থেকে বন্ধ রয়েছে সালদা নদীসংলগ্ন ব্রিজের কাজ। অন্যদিকে কসবা স্টেশন এলাকায় এখনো কাজ শুরুই করা যায়নি। প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, ওই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কাজ বন্ধ থাকায় সার্বিকভাবে প্রকল্প কাজের বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও সময় ও অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সর্বশেষ খবর