পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর রেলের নতুন ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর প্রথম দিনেই ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। টিকিট কাটা দূরের কথা, ওয়েবসাইটেই ঢুকতে পারেননি অনেকে। গতকাল সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরুর পর থেকেই ওটিপি না আসা, ওয়েবসাইট লোডিং ও সার্ভার সমস্যার কারণে অচলাবস্থা তৈরি হয়। দিনভর সমালোচনার পর রাত ৭টা ৫০ মিনিটে এ রিপোর্ট লেখার সময়ও ট্রেনের টিকিট কাটার ওয়েবসাইটে ঢোকা যাচ্ছিল না।
জানা গেছে, এতদিন রেলের কম্পিউটারাইজড টিকিটিংয়ের কাজটি করে আসছিল ‘সিএনএস’ নামের একটি কোম্পানি। এখন সেই
কাজ পেয়েছে সহজ, সিনেসিস ও ভিনসেন জয়েন্ট ভেঞ্চার। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই ভেঞ্চারের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।গতকাল ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে না পেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। ই-টিকিটিংয়ের নতুন সার্ভিস প্রোভাইডার সহজ লিমিটেডের দাবি, প্রথম দিনই তারা ‘সাইবার আক্রমণের’ শিকার হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদ বলেন, সাইবার হামলার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা দ্রুত সমাধানে আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করছেন। তবে উত্তরে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী গণমাধ্যমকে বলেন, সাইবার হামলার কথা তিনি শোনেননি। সকালে সমস্যার কথা শুনে সহজ-কে বলা হয়েছে। আমাদের জানানো হয়েছে, প্রায় ২ লাখ মানুষ একসঙ্গে টিকিট কাটতে ওয়েবসাইটে ঢোকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে।
অপারেটর পরিবর্তনজনিত কারণে গত ২১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনের পাশাপাশি কম্পিউটারাইজড সিস্টেমে টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখে রেলওয়ে। এ সময় হাতে লেখা টিকিট বিক্রি করা হয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে রেলওয়ে জানায়, ২৬ মার্চ সকাল ৮টা থেকে কাউন্টারের পাশাপাশি ঘরে বসে রেলের ওয়েবসাইট (http://eticket.railway.gov.bd/) থেকে অনলাইনেও টিকিট কেনা যাবে। জানা গেছে, নতুন ওয়েবসাইট থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নতুন অ্যাকাউন্ট করতে হবে। পুরনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপের অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়ে নতুন সাইটে লগ-ইন করা যাবে না। তবে, গতকাল শুরু থেকেই অনলাইনে টিকিট কাটতে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৯৪ সালে কম্পিউটারভিত্তিক টিকিটিং সিস্টেম চালু করে। ২৭টি স্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে টিকিট ইস্যু করা হতো। বর্তমানে ১০৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ৭৭টি স্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হচ্ছে। দৈনিক প্রায় ৯০ হাজার যাত্রীর টিকিট কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়, যার ৫০ শতাংশ অনলাইনে বিক্রি করা হয়।