শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় হাতাহাতি, সাসপেন্ড পাঁচ বিজেপি বিধায়ক

কলকাতা প্রতিনিধি

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যটির বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের নৃশংস ঘটনা কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা চত্বর। একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা। এ সময় পোশাক ধরে টানাটানি, মারধর, এমনকি ঘুসি মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। গোটা ঘটনায় বিজেপির পাঁচজন বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। গতকাল বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে বিধানসভা চলার সময় রামপুরহাটের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিবৃতি দাবি করেন বিরোধীরা। সেই সঙ্গে তাঁরা গোটা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁদের প্রশ্ন ছিল- বিধানসভা চলছে, অথচ এ ইস্যুতে যাবতীয় সরকারি ঘোষণা বাইরে করা হলো। তাঁদের দাবি, সংসদীয় ব্যবস্থায় এটা করা যায় না। একসময় প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। স্পিকারের চেয়ার ঘিরে ধরেন তাঁরা। তখন ওই জায়গায় চলে আসেন তৃণমূলের বিধায়করাও। একপর্যায়ে হঠাৎই উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। জামার কলার ধরে টানাটানি শুরু হয়। ধস্তাধস্তির মধ্যেই মাটিতে পড়ে যান বিধায়ক নরহরি মাহাতো। বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গারের জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়। আরেক বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির চুলের মুঠি ধরে টানা হয়। হাতাহাতির সময় ঘুসিতে তৃণমূলের বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ফেটে যায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে হয়। অসিত মজুমদারকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। এ ঘটনার পর বিজেপির পাঁচ বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গা, শঙ্কর ঘোষ, দীপক বর্মন, নরহরি মাহাতোকে সাসপেন্ড করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান ব্যানার্জি। গোটা ঘটনার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে ভর্ৎসনা করে স্পিকার বলেন, ‘বিধানসভা হট্টগোল করার জন্য নয়। আপনারা অধিবেশন চলতে দিচ্ছেন না।’ বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘বিধানসভায় বিরোধীদের কোনো জায়গা নেই। আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। আমাদের একাধিক বিধায়ককে কিল-ঘুসি মারা হয়েছে। সাধারণ পোশাকে কলকাতা পুলিশের কিছু লোককে বিধানসভার ভিতরে ঢোকানো হয়েছিল। বিধানসভার ভিতরেও বিজেপি বিধায়করা নিরাপদ নন।’ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের অভিযোগ, ‘বিজেপি বিধায়করা নিয়মিত বিধানসভা অধিবেশনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন। এদিন তাঁরা মার্শালদের ওপরও হামলা চালিয়েছেন, এমনকি আমাদের বিধাকদেরও মারধর করেন।’ এদিকে বগটুই গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে নয়। এদিনই নিজের শরীরের শতকরা ৬৫ ভাগ অগ্নিদগ্ধ নাজেমা বিবির মৃত্যু হয় হাসপাতালে।

সর্বশেষ খবর