স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারকে হত্যার পর তার লাশ ও ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন স্বামী। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ডেউয়াতলীতে এ ঘটনা ঘটে। আগুন লাগিয়ে ফজরের নামাজ পড়তে যান স্বামী। হত্যার ১৮ দিন পর এ রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব। গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী রেজাউল করিমকে। গতকাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পারি ২০১৭ সালের শুরুতে ইয়াসমিন আক্তারের বাড়ির (চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ডিঙ্গাভাঙ্গা) কাছে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন রেজাউল করিম। ওই সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার সুবাদে তার সঙ্গে ইয়াসমিনের মা বেবী আক্তারের পরিচয় হয়। রেজাউল করিম ঋণের কিস্তির টাকা নিতে ইয়াসমিনদের বাড়ি আসা-যাওয়া করতেন। একপর্যায়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে আগের স্বামী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে ইয়াসমিনের তালাক হয়ে যায়। পরে কোনো কাবিন না করেই রেজাউল করিম ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন। বিয়ে করে তিনি মালদ্বীপ চলে যান। গত ৭ জানুয়ারি রেজাউল মালদ্বীপ থেকে ফিরে আসেন। পরিবারের অমতে ১০ জানুয়ারি রেজাউল ইয়াসমিনকে তার বাড়ি বরুড়ার ডেউয়াতলী গ্রামে নিয়ে আসেন। রেজাউলের পরিবারের অমতে বিয়ে, অন্যদিকে যৌতুকের চাপের কারণে তাদের পারিবারিক কলহ চরমে ওঠে। রেজাউলের বরাত দিয়ে র?্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ১০ মার্চ বিকালে স্বামীর সঙ্গে ইয়াসমিনের বিভিন্ন বিষয়ে কথা কাটাকাটি হলে রেজাউল তাকে চড়থাপ্পড় দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান। রাত ১০টার সময় রেজাউলের বাবা-মা ঘুমিয়ে গেলে পুনরায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রেজাউল ইয়াসমিনের গলা দুই হাত দিয়ে চেপে ধরলে তিনি জ্ঞান হারান। কিছুক্ষণ পর গায়ে হাত দিয়ে দেখেন স্ত্রীর শরীর ঠান্ডা। ভোর ৫টার দিকে তিনি মৃত ইয়াসমিনের সারা শরীরে ও ঘরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এরপর ফজরের নামাজ পড়তে চলে যান। পরে আগুন নেভানোর সময় স্থানীয়দের সঙ্গে তিনিও হাত লাগান। বলতে থাকেন ঘরের ভিতর তার স্ত্রী ও বিদেশ যাওয়ার সব কাগজপত্র এবং টাকা-পয়সা রয়েছে। বিষয়টি বলতে বলতে রেজাউল জ্ঞান হারানোর ভান করেন।
পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। ইয়াসমিনের পরিবার এ বিষয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলা শুরু করলে হাসপাতাল থেকে আত্মগোপনে চলে যান রেজাউল।
