বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা
শাহজাহানপুরে জোড়া খুন

এখনো গ্রেফতার হয়নি শুটারের চালক অস্ত্রদাতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহজাহানপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ গ্রেফতার হয়েছে। তবে এখনো গ্রেফতার হয়নি তার মোটরসাইকেল চালক কিংবা অস্ত্রদাতা। তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে সাত দিনের রিমান্ডে থাকা শুটার আকাশ এখনো পুরোপুরি মুখ খুলছে না বলে মন্তব্য করেছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ঘটনার নেপথ্য কারণ জানতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলিকে র‌্যাব এবং মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল শাহরিয়ারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আরেকটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। শিগগিরই একজন চিত্রনায়িকাকে একটি সংস্থা ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা ভাবছে। ওই নায়িকার সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব ছিল নিহত টিপুর। এ ছাড়া জোড়া খুনের ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন কাইল্যা পলাশ র‌্যাবের কাছে আটক হয়েছেন এমন তথ্য এলেও র‌্যাব তা স্বীকার করেনি। একাধিক সূত্র বলছে, চলচ্চিত্রের এক নায়িকার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল নিহত টিপুর। তবে ওই নায়িকা একসময় কারাবন্দি এক রাজনৈতিক নেতার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিলেন। দুই বছর আগে ওই নায়িকার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে টিপুর। বিষয়টি কারাবন্দি ওই নেতা ভালোভাবে নেননি বলে তার ঘনিষ্ঠজন অনেকেই জানতেন। বিষয়টি এরই মধ্যে নজরে এসেছে তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘নির্দেশদাতা কে গ্রেফতার আকাশ তা না জানলেও তার কাছ থেকে অনেক নাম আমরা জানতে পেরেছি। সব তথ্যই আমরা বিশেষভাবে নানা প্রক্রিয়ায় খতিয়ে দেখছি। কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি যত শক্তিশালী কিংবা প্রভাবশালী হোন না কেন। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিখুঁত পরিকল্পনায় টিপু হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। কাট আউট পদ্ধতিতে অন্তত চারটি স্তরের লোকজন জড়িত। প্রথম স্তরে রয়েছেন শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ ও অজ্ঞাত মোটরসাইকেলচালক। দ্বিতীয় স্তরে আছেন অস্ত্র ও মোটরসাইকেল সরবরাহকারী। তৃতীয় স্তরে রয়েছেন সমন্বয়কারী। আর সর্বশেষ চতুর্থ স্তরে বসে আছেন মূল পরিকল্পনাকারী বা মাস্টারমাইন্ড।

ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম বলেন, ‘আকাশ গুলি করার কথা অবলীলায়ই স্বীকার করেছে। সে যে অত্যন্ত দক্ষ একজন শুটার তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তার সব তথ্যই আমরা আমলে নিচ্ছি না। বিভিন্ন কর্নার থেকে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’ একাধিক সূত্র বলছে, ক্যাসিনো অভিযান টিপুর জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে। রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যাকান্ডের পর দীর্ঘদিন গুরুত্বের বাইরে থাকলেও হঠাৎ দলে তার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। প্রভাব হারাতে থাকেন আগের ক্ষমতাসীনরা। মতিঝিল, আরামবাগ, এজিবি কলোনি, শাহজাহানপুর, কমলাপুর টিপুর একক নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকে ক্রমান্বয়ে। টিপু ও তার স্ত্রী কাউন্সিলর ডলির ঘনিষ্ঠজনরাই এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তবে টিপু হত্যার পর এলাকার অনেকেই আতঙ্কে ভুগছেন। তারা ব্যক্তিগতভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তার নিরাপত্তার বিষয়ে।

সর্বশেষ খবর