সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই বছর পর জমেছে পুরান ঢাকার ইফতার বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই বছর পর জমেছে পুরান ঢাকার ইফতার বাজার

রমজানে ইফতারের ঐতিহ্য মানেই পুরান ঢাকা। চকবাজারের ইফতারের সুপরিচিতি সারা দেশেই। করোনার কারণে গত দুই বছর এই ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজারের জৌলুস ছিল অনেকটাই ম্লান। সংক্রমণ কমে যাওয়ায় আবারও ঐতিহ্যে ফিরেছে চকবাজারের ইফতার। গতকাল দুপুরের পর থেকেই বাহারি ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসতে শুরু করেন দোকানিরা। ইফতারের সময় এগিয়ে আসতেই ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম হয়ে ওঠে পুরান ঢাকার বিভিন্ন অলিগলি।

গতকাল রমজানের প্রথম দিনেই ইফতার বিক্রির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পুরো চকবাজার ছিল জমজমাট। ইফতার সামগ্রীর দোকানগুলোতে সম্মিলিতভাবে উচ্চারিত হচ্ছিল সেই পুরনো সংলাপ- ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গা ভইরা লইয়া যায়’। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ চকবাজারে ছুটে আসে ইফতার নিতে। ক্রেতার চাপে প্রচ- যানজটের সৃষ্টি হয় হয় চকবাজার এলাকায়।

বাহারি ইফতার সামগ্রীতে অনেকটাই মোগল ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে সুনাম ধরে রেখেছে চকবাজার ইফতারপাড়া। এখানকার ইফতারির মধ্যে উল্লেখযোগ্য আস্ত খাসির কাবাব, আস্ত মুরগির কাবাব, মোরগ মুসাল্লম, বটি কাবাব, টিকা কাবাব, কোপ্তা, চিকেন কাঠি, শামি কাবাব, শিকের ভারী কাবাব, সুতি কাবাব, কোয়েল পাখির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, জিলাপি, শাহী জিলাপি, নিমকপারা, সমুচা, আলাউদ্দিনের হালুয়া, হালিম, দইবড়া, সৌদি পানীয় লাবাং, কাশ্মীরি সরবত এবং ৩৬ উপকরণের মজাদার খাবার ‘বড় বাপের পোলায় খায়’।

তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ইফতার সামগ্রীর দাম কিছুটা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, মাংস ও অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় ইফতার সামগ্রীর দাম বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর সুতি কাবাব প্রতি কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা, খাসির সুতি কাবাব ১ হাজার ৪০০ টাকা, কোয়েল পাখির রোস্ট ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস, বড় বাপের পোলায় খায় ৬০০ টাকা কেজি, ছোলা-ঘুঘনি ২৮০ টাকা কেজি, পেশতা রুটি ৭০ টাকা পিস, শাহী পরোটা ৩০ থেকে ৬০ টাকা, আস্ত মুরগির রোস্ট ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, দইবড়া ২০০ থেকে ৪৪০ টাকা কেজি, রেশমি জিলাপি ৩০০ টাকা, সাধারণ জিলাপি ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ বছর করোনা নিয়ে বিধিনিষেধ না থাকায় রমজান মাসজুড়ে এখানে রকমারি ইফতারির পসরা বসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

গতকাল ইফতারের আগে পুরান ঢাকার চকবাজার, জনসন রোড, ইংলিশ রোড়, কলতাবাজার, সুত্রাপুর বাজার, গেন্ডারিয়া ও ওয়ারী কাঁচাবাজারের আশপাশের সড়কগুলো ইফতার বিক্রেতাদের হাঁকডাকে ভিন্ন রূপ নেয়। উত্তরা থেকে ইফতার কিনতে আসা হাবিব হোসেন বলেন, ১০-১২ বছর ধরে প্রতি বছরই প্রথম রোজায় পুরান ঢাকা থেকে ইফতার কেনেন।

সর্বশেষ খবর