মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বুচা শহরের লাশ নিয়ে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ

প্রতিদিন ডেস্ক

ইস্তাম্বুল শান্তি বৈঠকের অঙ্গীকার অনুযায়ী রুশ সেনারা ইউক্রেনের দখলকৃত বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সরে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে রাজধানী কিয়েভের আশপাশ এলাকা থেকে রুশ বাহিনী এরই মধ্যে সরে গেছে এবং সেখানে ইউক্রেন বাহিনী নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। এরপর ইউক্রেন দাবি করেছে  তারা বুচা শহরে প্রায় ৩০০ বেসামরিক মানুষের লাশ পেয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য তারা রুশ বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে। অন্যদিকে রুশ বাহিনী হত্যাকাণ্ড ঘটনোর জন্য ইউক্রেন বাহিনীকে দায়ী করেছে।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী বুচা শহরে লাশের খবর প্রকাশ হতেই যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে রুশ বাহিনী এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে আবারও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছে। অন্যদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বুচা শহরে বেসামরিক নাগরিকদের লাশের ফুটেজ রাশিয়াকে দোষী করতে যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে করা হয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এ উসকানির গুরু কারা? অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো।’ মারিয়া জাখারোভা আরও বলেন, ‘বুচা শহরে বেসামরিক নাগরিকদের লাশের ছবি প্রকাশ হওয়ার পরপরই পশ্চিমাদের হইচই ইঙ্গিত দেয় রাশিয়ার সুনাম নষ্টের অংশের পরিকল্পনা হিসেবে এটা করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাশিয়ার যুক্ত থাকার কোনো প্রমাণ নেই।’

সামি ছাড়ছে রুশ বাহিনী : রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর সামি। দেশটির কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে সামরিক অভিযানের শুরুতেই অবরুদ্ধ করে ফেলে রুশ বাহিনী। তবে রুশ সেনারা এখন সামি ছাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর।

সামি থেকে রুশ বাহিনীর প্রত্যাহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম পোস্টে গভর্নর দিমিত্রো জিহভিতিস্কি বলেন, শহর থেকে রুশ সেনারা সরে যাচ্ছে।

পুতিন-জেলেনস্কি আলোচনার শর্ত : ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক হওয়া সম্ভব। তবে তার আগে অবশ্যই দুই দেশকে সুনির্দিষ্টভাবে একটি লিখিত সমঝোতা নথি তৈরি করতে হবে।

খবরে বলা হয়, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিরসনে পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা করছে তুরস্ক। ১ এপ্রিল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, এ ধরনের বৈঠককে অগ্রাধিকার দেয় তুরস্ক। একই দিনে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইবরাহিম কালিন বলেছেন, এ ধরনের বৈঠকের জন্য সুনির্দিষ্ট করে তারিখ উল্লেখ করাটা কঠিন। কারণ পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পাল্টাচ্ছে। এমন অবস্থায় স্থানীয় সময় রবিবার রাশিয়া-ওয়ান টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। এ সময় তিনি বলেন, জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে আপত্তি নেই পুতিনের। তবে এর জন্য কিছু বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। পেসকভ বলেন, ‘না, পুতিন কখনো বৈঠকের ব্যাপারে না করেননি। পুতিন কখনই এ ধরনের বৈঠকের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি এবং এ ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। হ্যাঁ, অনুমানের ভিত্তিতে বলা যায়, এ বৈঠক হতে পারে।’ দিমিত্রি পেসকভ আরও বলেন, বৈঠকটি আয়োজনের আগে দুই প্রতিনিধি দলের উচিত সুনির্দিষ্ট নথি তৈরি করা। নিছক কিছু পরিকল্পনা নয়, বরং সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত নথি থাকতে হবে। তার পরই এ ধরনের বৈঠক আয়োজন করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর