বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

পানিতে ডায়রিয়ার জীবাণু নেই, আমার বাসায়ও দুর্গন্ধ : ওয়াসা এমডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষায় ডায়রিয়ার জীবাণু নেই বলে দাবি করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, ‘যেসব এলাকায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি, সেখানকার পানি পরীক্ষা করেছে ঢাকা ওয়াসা। এর পরও জীবাণু নিশ্চিহ্ন করতে পানিতে ক্লোরিনের মাত্রা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এজন্য পানিতে কিছুটা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। নয়াপল্টনে আমার নিজের বাসার পানিতেও ক্লোরিনের গন্ধ পাই।’

গতকাল ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘নগরবাসীর চাহিদা-ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা’ শীর্ষক ‘ডুরা সংলাপে’ তিনি এ কথা বলেন। ডুরা সভাপতি মো. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত সংলাপ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিক।

কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এ অবস্থায় অনেকেই ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিকে দোষারোপ করছেন।

এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তাকসিম এ খান বলেন, ‘আইসিডিডিআরবির সঙ্গে আমাদের কয়েক দফা যোগাযোগ হয়েছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়লেই ১০টি এলাকার ঠিকানা তারা আমাদের দিয়েছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে আমরা ওইসব এলাকার পানি ল্যাবে টেস্ট করাই। সেই ল্যাব টেস্টে আমরা কোনো জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া পাইনি। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে আইসিডিডিআরবিকে জানিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘পানিতে যদিও বা কোনো জীবাণু থাকে, তা যাতে ধ্বংস হয় সেজন্য আমরা ক্লোরিন দিয়ে থাকি। অনেক সময় ক্লোরিন পাইপের শেষ মাথা পর্যন্ত যায় না। আমরা ওই বিশেষ স্থানগুলোয় ক্লোরিন বাড়িয়ে দিয়েছি। এ ডায়রিয়ার সঙ্গে আমাদের ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে যা পেয়েছি তাতে কোনো সম্পৃক্ততা সরাসরি নেই। ক্লোরিন মেশানোর কারণে পানিতে কিছুটা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ গন্ধ দূর করতে আমরা আন্ডারগ্রাউন্ড পানি ও আমাদের শোধন করা পানির মিশ্রণ করে সরবরাহ করি। আমাদের ৫ থেকে ১০ শতাংশ জায়গার মধ্যে পাইপ ফাটা থাকে। যখনই অভিযোগ পাই সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা ঠিক করে দিই। তার পরও কিছু জায়গায় সমস্যা হয়। নয়াপল্টনে আমার নিজের বাসার পানিতেও গন্ধ আছে।’ তিনি নগরবাসীকে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন।

পানির জন্য আগের মতো হাহাকার নেই উল্লেখ করে তাকসিম এ খান বলেন, ‘২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে চাহিদার তুলনায় আমরা বেশি পানি উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। কাজেই ঢাকা শহরে পানির হাহাকার বা অভাব এখন নেই। আমাদের ৫ থেকে ৬ শতাংশ সিস্টেমলস আছে, যা খুবই নগণ্য। অনেক সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ময়লা পানি ঢুকে পড়ে।’

তিনি বলেন, ‘ওয়াসার পানি নিরাপদে ট্যাংকি পর্যন্ত দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। বাসার ট্যাপ পর্যন্ত নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নয়। সেজন্য আমরা বলব আপনারা পানি ফুটিয়ে খান। পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে সবকিছু আমরা জানিয়েছি, এখন সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়াসা সচিব প্রকৌশলী শারমিন হক আমীর, পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম শহিদ উদ্দিন, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী উত্তম কুমার রায়, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিশাত মজুমদার, ডুরা সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলয় মামুন প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর