বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
মার্কিন সিনেট নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর ঘাতককে হস্তান্তরের অনুরোধ

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

বঙ্গবন্ধুর ঘাতককে হস্তান্তরের অনুরোধ

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর ও অন্যরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ৫ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে তার সরকারি সফরে ব্যস্ত দিন কাটিয়েছেন। এদিন মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সাক্ষাৎসহ বেশ কয়েকটি থিংকট্যাংকে বক্তৃতা করেছেন তিনি। তার সঙ্গে রয়েছেন সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ ও নাহিম রাজ্জাক এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। রয়েছেন উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন মার্কিন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা সিনেটর চাক শুমারের (ডি-এনওয়াই) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যর্পণের  বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং এ বিষয়ে সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতার সহায়তা কামনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশ ককাসকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সিনেটরকে প্রস্তাব দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাবোটের (আর-ওএইচ) সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এ সময় একই ধরনের আলোচনা হয়। র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই প্রত্যাহার করা হবে বলেও তিনি বাংলাদেশের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক থিংকট্যাংক দ্বারা আয়োজিত কয়েকটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। এর মধ্যে ছিল ইউনাইটেড স্টেট ইনস্টিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি), সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস) এবং ন্যাশনাল ব্যুরো অব এশিয়ান রিসার্চ (এনবিআর)।

আলোচনার সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে তা তুলে ধরেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ইউএস-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আগামী ৫০ বছরে আরও সমৃদ্ধ হবে। তিনি মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক নীতির প্রচার ও সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টারও বিশদ বিবরণ দেন এবং মার্কিন সরকারকে র‌্যাবের শীর্ষস্থানীয় ৭ ব্যক্তির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। ইউএস চেম্বার অব কমার্সের ‘ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’র সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হয়ে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জনকারী পণ্যসমূহ বাংলাদেশ থেকে আমদানির আহ্বান জানান। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক যে সম্পর্ক রচিত হয়েছে সামনের ৫০ বছরে আরও তা সমৃদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে সাহায্য নির্ভর অর্থনীতির তকমা থেকে ‘বিনিয়োগচালিত’ অর্থনীতিতে পরিণত করা সম্ভব হবে যদি সার্বিক সহযোগিতার দিগন্ত আরও প্রসারিত হয়। ইউএস-বাংলাদেশ সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন উল্লেখ করেন, প্রবৃদ্ধির মূল ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে মার্কিন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে। এর অন্যতম হচ্ছে টেলিকম অবকাঠামো, ডিজিটাল অর্থনীতি, ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্লু ইকোনমি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, আর্থিক প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল পেমেন্ট। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমেরিকান কোম্পানিগুলোর জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ করেছেন এবং বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন। এসব অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাও ছিলেন।

৫ এপ্রিল বাংলাদেশ হাউসে রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের সৌজন্যে এক ডিনার পার্টিতে যোগদান করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট প্রবাসীরাও।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর