শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

দুর্লভ পরিযায়ী পাখি পাহাড়ি নীলকণ্ঠ

আলম শাইন

দুর্লভ পরিযায়ী পাখি পাহাড়ি নীলকণ্ঠ

পাখির বাংলা নাম পাহাড়ি নীলকণ্ঠ। ইংরেজি নাম ডলারবার্ড (Dollarbird)। বৈজ্ঞানিক নাম Eurystomus orientalis। বাংলাদেশে নীলকণ্ঠ এবং পাহাড়ি নীলকণ্ঠ নামক দুই প্রজাতির পাখির দেখা মেলে।

এ পাখি দেখতে চমৎকার। দেহের তুলনায় মাথা খানিকটা বেঢপ আকৃতির হলেও স্লিম গড়ন।

দেখতে সুদর্শন হলেও এ প্রজাতির কণ্ঠস্বর সুমধুর নয়, কর্কশ। ডাকে ‘ক্যাক ক্যাক’ সুরে। ওড়ার সময় ডাকে ‘ক-চক-চক-চক’ সুরে। এরা দুর্লভ দর্শন পরিযায়ী পাখি। দেশে যখন তখন যত্রতত্র দেখা যায় না, শুধু প্রজনন মৌসুমে (গ্রীষ্মকালে) চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ অরণ্যে দেখা যায়। এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউগিনি পর্যন্ত। দুর্লভ দর্শন বিধায় এরা বাংলাদেশে মহাবিপন্ন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তবে বিশ্বে বিপদমুক্ত। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

এ প্রজাতি লম্বায় হয় ৩০ সেন্টিমিটার। ওজন ১৫০ গ্রাম। ঠোঁট কমলা লাল, অগ্রভাগ বাঁকানো। মাথা কালচে-বাদামি। গলা থেকে নীলাভ আভা ঠিকরে বের হয়, কাছ থেকে গোখরা সাপের পিঠের মতো দেখায়। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের পালক কালচে নীল। ওড়ার পালক কালচে-বাদামি। ডানার প্রান্ত পালকের গোড়া রুপালি-সাদা। চোখের বলয় হলদে-বাদামি। পা ও পায়ের পাতা গোলাপি-লাল। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের চেহারা ভিন্ন। এদের ঠোঁট অনুজ্জ্বল।

এদের প্রধান খাবার উড়ন্ত পোকামাকড়। এরা উড়ে উড়েই শিকার ধরে। এ ছাড়া এদের প্রজনন সময় মার্চ থেকে জুন। বাসা বাঁধে গাছের কোটরে কিংবা পাহাড়ের প্রাকৃতিক গর্তে। ডিম পাড়ে তিন-চারটি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৭-২০ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ৩০-৩৫ দিন।

সর্বশেষ খবর