রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

সেই অস্ত্র নিয়ে এখনো অন্ধকারে পুলিশ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বৈদেশিক ডাকে করে ইতালি থেকে নাইন এমএম এবং এইট এমএম পিস্তল কী উদ্দেশ্যে দেশে আনা হয়েছে তা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার চট্টগ্রাম কর অঞ্চলের অফিস সহকারী কামরুল হাসানকে একাধিকবার রিমান্ডে এনেও কোনো তথ্য পায়নি। এ চালানের অন্যতম হোতা রাজিব বড়ুয়াও রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই মামলা দায়েরের দেড় মাস পরেও পুলিশ রয়েছে অন্ধকারে। এদিকে অস্ত্রগুলো আসল কি না তা ব্যালিস্টিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, ‘কী উদ্দেশ্যে ইতালি থেকে ওই অস্ত্রের চালান আনা হয়েছে তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি। এ চালানের প্রেরক রাজিব বড়ুয়াকে গ্রেফতার করা গেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। তাই তাকে গ্রেফতারের ওপর জোর দিয়েছি।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার এসআই ফয়সাল সরওয়ার বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি রাজিব অবৈধ পথে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে। তাই তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না।’

জানা যায়, ইতালি থেকে পাঠানো অস্ত্রের চালান জব্দ করার এক দিন পরই গ্রেফতার করা হয় চালানের প্রাপক চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর অফিস সহকারী কামরুল হাসানকে। তাকে রিমান্ডে এনে তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পায়নি। এ চালানের রহস্য উন্মোচনে নানান জায়গায় হানা দিলেও মেলেনি সন্তোষজনক কোনো উত্তর। এ ছাড়া প্রেরক রাজিব বড়ুয়াও রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই এ চালান নিয়ে এখনো অন্ধকারে রয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ইতালি থেকে অস্ত্রের চালান পাঠিয়ে দেশে চলে আসেন রাজিব। অস্ত্র জব্দের এক দিন আগেও আগ্রাবাদ এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ চালানের খবর ছড়িয়ে পড়লে গা-ঢাকা দেন রাজিব। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি রামগড় হয়ে ত্রিপুরায় পালিয়ে যান রাজিব। সিআইডির ল্যাবে সেই দুই অস্ত্র : বৈদেশিক ডাকে করে ইতালি থেকে পাঠানো নাইন এমএম এবং এইট এমএম পিস্তল আসল কি না তা ব্যালিস্টিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অস্ত্র দুটি সিআইডির ল্যাবে পাঠান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফয়সাল সরওয়ার বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো আসল নাকি খেলনার তা পরীক্ষার জন্য সিআইডির ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহে ব্যালিস্টিক পরীক্ষার ফলাফল পাব।’ 

 

প্রসঙ্গত, গত ২০ ফেব্রুয়ারি বৈদেশিক ডাকে গৃহস্থালী পণ্যের আড়ালে আসা একটি অস্ত্রের চালান জব্দ করে কাস্টমস। ওই চালান থেকে একটি করে নাইন এমএম পিস্তল, এইট এমএম পিস্তল এবং দুটি খেলার পিস্তুল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নগরীর বন্দর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ওই চালানের প্রাপক আগ্রাবাদ এলাকার কামরুল হাসান এবং প্রেরক ইতালি প্রবাসী রাজিব বড়ুয়াকে আসামি করা হয়। পরে ওই চালানের প্রাপক চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর অফিস সহকারী কামরুল হাসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর