শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

কালবৈশাখীতেই শুরু নতুন বছর

ঝড় ও বজ্রপাতে নয়জন নিহত, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

প্রতিদিন ডেস্ক

কালবৈশাখীতেই শুরু নতুন বছর

দেশের কয়েকটি স্থানে গত বৃহস্পতিবার কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সুনামগঞ্জ : কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে সুনামগঞ্জের দুই উপজেলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে জেলার জগন্নাথপুর ও শাল্লা উপজেলার পল্লীতে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, এদিন ভোরে কালবৈশাখী ঝড়ে জগন্নাথপুর উপজেলার সুলেমানপুর গ্রামে গাছ উপড়ে পড়ে ঘরচাপায় ঘুমন্ত অবস্থায় মা ও দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- হারুন মিয়ার স্ত্রী মৌসমা বেগম (৩৫), মেয়ে মাহিনা আক্তার (৪) ও এক বছরের ছেলে হোসাইন মিয়া। হারুন মিয়া জানান, উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সুলেমানপুর গ্রামের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বুলু মিয়ার বাড়িতে এক যুগ ধরে তিনি তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে আছেন। ওই বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। পাশাপাশি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করতেন। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার চকবানিয়াপুর গ্রামে।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬০ হাজার টাকা  অনুদান দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে শাল্লা উপজেলার নাছিরপুর গ্রামের পাশের হাওরে  ধানখেতের নাড়া কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে  বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- মকবুল খাঁ (৫০) ও তার ছেলে মাসুদ খাঁ (৯)। এতে মকুবলের ছেলে রিপন খাঁ (১১) ও শ্যালক তানভীর হোসেন (৭) আহত হয়েছে। আহতদের হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে হয়েছে। পুলিশ জানায়, মকবুল খাঁ বৃহস্পতিবার  সকালে হাওরে ধানের নাড়া কাটতে দুই ছেলে ও শ্যালককে নিয়ে বাড়ির পাশের হাওরে যান। এ সময় বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়।

হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বজ্রপাতে দুই শিশু ও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে পৃথক স্থানে এ তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। তারা হলেন- বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৩ নম্বর দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের তাতারী মহল্লার বাসিন্দা আক্কেল আলীর ছেলে হোসাইন আহমেদ (১২), একই মহল্লার আবদুর রহমানের মেয়ে রুমা আক্তার (১২) ও খাগাউড়া ইউনিয়নের এড়ালিয়া গ্রামের সামছুল মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়া (২৬)। স্থানীয়রা জানান, রুমা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সকাল ৭টার দিকে সে বাড়ির পাশের মাঠে লাকড়ি শুকাচ্ছিল। এসময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মেয়েটির মৃত্যু হয়। এ ছাড়া এদিন সকালে হোসাইন আহমদ ও আলমগীর মিয়া নিজেদের এলাকার হাওরে কৃষিকাজ করছিলেন। পৃথক স্থানে দুজন বজ্রপাতে আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এসময় দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় কালবৈশাখী ঝড়ে গাছচাপা পড়ে মোমেনা খাতুন (৪৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দামুড়হুদার কুড়ুলগাছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোমেনা খাতুন কুড়ুলগাছি গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ও আশপাশ এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। এসময় মোমেনা খাতুন স্বামীর সঙ্গে তাদের টিনের ছাপড়াঘরে বসে ছিলেন। হঠাৎ পাশের একটি বড় লিচুগাছ ভেঙে পড়ে তাদের ছাপড়াঘরে। এতে গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যান মোমেনা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৬৪ কিলোমিটার।

 

 

সর্বশেষ খবর