পারিশ্রমিক হিসেবে ৪০০ টাকা না পেয়ে ইকোনো সার্ভিসের বাসের সুপারভাইজার রিয়াদ হোসেন লিটনকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাসটির চালকের সহকারী  ইউসুফকে শনিবার নরসিংদীর মাধবদী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর  দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির এসপি মুক্তা ধর। তিনি বলেন, নিহত রিয়াদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার উত্তর মোহাম্মদনগরে। গত ৯ এপ্রিল লক্ষ্মীপুরের সদর থানার ঝুমুর মোড়ে জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে থেকে ইকোনো সার্ভিসের একটি যাত্রীবাহী বাসের মধ্য থেকে রিয়াদের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে এই হত্যাকান্ডে ইউসুফের সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে। সিআইডি কর্মকর্তা মুক্তা ধর বলেন, ইউসুফ নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। পরে তিনি প্রতিবেশী ওবায়দুলের মাধ্যমে ইকোনো বাসের চালকের সহকারীর কাজ নেন। ৮ এপ্রিল বিকালে রাজধানীর মানিকনগরে ইকোনো সার্ভিসের কাউন্টার থেকে বাসচালক নাহিদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে সুপাইভাইজার রিয়াদ ও পুরাতন বাসের কর্মী শিপনের সঙ্গে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশে রওনা করেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসটি লক্ষ্মীপুর সদর থানার ঝুমুর মোড়ে পার্কিং করে। শিপন দুই দিনের ছুটিতে যাবে, তাই তার বদলে পরের দিন ভোরে নতুন কর্মী ইউসুফ পানি দিয়ে বাসটি পরিষ্কার করতে থাকেন। চালক নাহিদ, সুপারভাইজার রিয়াদ ও তাদের সহকারী শিপন সারা দিনের পাওনা মজুরি ভাগ করে নাহিদ ও শিপন বাড়ি চলে যান। রাত ১টার দিকে ইউসুফ ওই বাসে থাকা রিয়াদের কাছে তার সারা দিনের পারিশ্রমিক হিসেবে ৪০০ টাকা দাবি করে। তখন রিয়াদ তাকে জানান, তার দায়িত্ব এখনো শুরু হয়নি। ৯ এপ্রিল ভোর থেকে তার দায়িত্ব শুরু হবে। লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা প্রতি আপ-ডাউন ট্রিপের জন্য তিনি ৪০০ টাকা করে পাবেন। টাকার বিষয়ে কোনো কথা থাকলে সেটা গাড়ি চালক নাহিদকে বলার পরামর্শ দেন রিয়াদ। কিন্তু ইউসুফ বলেন, ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত পুরাতন কর্মী শিপনের মাধ্যমে তিনি কাজ শিখতে এসেছেন, তাকে পারিশ্রমিক দিতে হবে। এই নিয়ে সুপারভাইজার রিয়াদের সঙ্গে তার তর্ক-বিতর্ক পরে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে দেড় ইঞ্চি একটি রড দিয়ে রিয়াদকে মাথায় আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল নিহত রিয়াদের স্ত্রী হালিমা আক্তার লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গ্রেফতার ইউসুফের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার বারআনীতে।