মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
রায়হান হত্যা

পাঁচ পুলিশসহ ছয়জনের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো সিলেটে আলোচিত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম। গতকাল পাঁচ পুলিশসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ মো. আবদুর রহিমের আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য সিলেট কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। রায়হান হত্যার পর তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আদালত আগামী ১০ মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছে বলে জানিয়েছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নওশাদ আহমদ।

অভিযুক্তরা হলেন, বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস, হারুনুর রশিদ ও আকবরের বন্ধু কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আবদুল্লাহ আল নোমান নামের এক যুবক। অভিযোগ গঠনকালে কারান্তরিন পাঁচ পুলিশ সদস্যকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। অপর আসামি নোমান এখনো পলাতক রয়েছেন। এর আগে গত ১২ এপ্রিল মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ ধার্য ছিল। তবে আসামিদের পক্ষে ডিসচার্জ পিটিশন দাখিল করায় ওই দিন চার্জ গঠন হয়নি। পরে আদালত ১৮ এপ্রিল ডিসচার্জ পিটিশনের শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন মহানগর দায়রা জজ মো. আবদুর রহিম। বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম এ ফজল চৌধুরী জানান, ‘সোমবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই (বরখাস্তকৃত) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে। দুপুর ১২টার দিকে বিচারক মো. আবদুর রহিমের আদালতে আসামিদের হাজির করা হয়। এ সময় আসামিদের পক্ষে ডিসচার্জ পিটিশনের (খারিজ আবেদন) শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞ বিচারক এ সময় পিটিশন না মঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন এবং সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ১০ মে ধার্য করেন। ওই দিন রায়হানের স্ত্রী মামলার বাদী তাহমিনা বেগমসহ আরও দু-একজন সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে সিলেট নগরীর কাস্টঘর থেকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়ার যুবক রায়হান আহমদকে নির্যাতন করে পুলিশ। ১১ অক্টোবর সকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ পাঁচজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের রায়হান হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়। ২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। অভিযোগপত্রে পাঁচ পুলিশ সদস্য ছাড়া এসআই আকবরের বন্ধু কোম্পানীগঞ্জের সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানকেও আসামি করা হয়। এদিকে, ছেলে খুন হওয়ার দীর্ঘ দেড় বছরে বিচারকার্য শুরু না হওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন রায়হানের মা সালমা আক্তার। তবে একটু দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত বিচারকার্য শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেনে তিনি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন রায়হানের মা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর